বাবু তার ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্টে লিখেছেন, “… যদি সত্যি যৌথ প্রযোজনায় প্রতারিত হতে না চান তাহলে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করুন। আইন বদলাতে আন্দোলন করুন।
যৌথ প্রযোজনা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন বাবু। এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, “…এই যুগে দর্শক নন্দিত ছায়াছবি তৈরি করতে যতো টাকা লগ্নি প্রযোজন তা শুধু বাংলাদেশের বাজেট দিয়ে বানানো সম্ভব নয়। আর তাই যৌথ প্রযোজনার প্রয়োজন আছে। ইরফান খানের আইকে আর এসকে মুভিজ সাথে না থাকলে জাজ কি সাহস পেতো দশ কোটি টাকার বিনিয়োগ করে ‘ডুব’-এর মতো ছায়াছবি বানানোর? আগের মতো ফ্ল্যাট চিত্রায়ণের ছায়ছাবি এখন চলবে না। বিশ্ব বাজারে ছায়াছবি মুক্তি না দিতে পারলে হবে না। ব্যবসা করতে হবে। দশর্ক এখন অনেক পরিপক্ষ। ”
প্রশ্ন রেখে বাবু লিখেছেন, ‘পুরনো প্রযোজক-পরিবেশকরা ছায়াছবি বানাচ্ছেন না কেন ? তাদের কি কেউ বারণ করেছে? সবাই বলেন যে, জাজ সব টাকা নিয়ে যাচ্ছে। ভাল কথা। তাদের তাহলে নিতে দিয়েন না। আমি যতজন প্রযোজককে চিনি তারা সবাই ক্ষমতাবান, অর্থ বিত্তশালী, তারা চাইলেই সিনেমা হল দশ বারোটা ডিজিটাল করতে পারেন যে কোনো মূহুর্তে, কিন্তু তারা করছেন না, কেন করছেন না ? কিসের ভয় ? দায়টা কার ? অনেকের গালগল্প শুনেছি, ‘এই বছর একশো হল ডিজিটাল করবো, আমার ছায়াছবির সাথে প্রজেক্টর ফ্রি দেবো, মাসে মাসে ছায়াছবি মুক্তি দেবো। কত কথা! কিন্তু কথা রাখলেন কে? যারা প্রযোজক তাদের শতকরা অর্ধেকের বেশি সিনেমা হলের মালিক আর নয়তো কোনো না কোন সিনেমা হল ভাড়া বা লিজ নিয়ে চালাচ্ছেন। কিন্তু তারা কেউ একটা প্রজেক্টর কিনতে পারেন না? হল টা ঠিক করতে পারেন না! আসলে পারেন না ঠিক না, ইচ্ছা করে করছেন না। কয় টাকা দাম একটা প্রজেক্টেরর? যারা নিজের সিনেমা হলে একটা প্রজেক্টর লাগানোর ঝুঁকি নিতে পারেন না তারা চলচ্চিত্রের উন্নয়ন কি করে করবেন ?’
কিছু উদাহরণ টেনে বাবু জাজের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়ে লিখেছেন, ‘গত সাত বছরে চলচ্চিত্রে কেউ যদি টাকা ইনভেস্ট (বিনিয়োগ) করে থাকে জাজই করেছে। ডিজিটাল ছায়াছবি চালানোর বাজার যদি কেউ করে থাকে জাজই করেছে। অন্য কোনো প্রযোজক এই প্রচেষ্টা করেন নি। যৌথ প্রযোজনা জাজ শুরু করেছিলো আন্তর্জাতিক আঙ্গিনাতে বাংলাদেশি ছায়াছবিকে নিয়ে যাবার জন্য। ‘ডুব’ নিয়ে তারা তাই করছে। মোস্তফা সারয়ার ফারুকী পরিচালনা করেছেন ডুব, ভারতীয় কেউ নন। কিন্তু ছবিটা বাংলাদেশ ভারত যৌথ প্রযোজনার। সেটা কিন্তু কেউ দেখছে না। সবাই যেন হা ডু ডু খেলোয়াড়, টেনে ধরাই তাদের কাজ। ’
আলোচিত এই চিত্রনাট্যকারের প্রশ্ন, ‘ প্রযোজক সমিতির প্রাক্তন নেতাদের কেউ কি ছায়াছবি বানাচ্ছেন ? না । একজনও না। অথচ বাইরে থেকে আসা প্রযোজক ‘আয়নাবাজি’ বানিয়ে বাজিমাত করেছেন। শামীম আহম্মেদ রনির ‘বসগিরি’ও সুপারিহট করেছে। ’
জাজ যৌথ প্রযোজনার পাশপাশি একক প্রযোজনায় বেশ কিছু ছবি তৈরি ও মুক্তি দিয়েছে, যেটা অন্য প্রযোজকদের তুলনায় বেশিই। এ প্রসঙ্গে বাবুর জিজ্ঞাসা ‘আর কোনো প্রযোজক এক বছরে এতোগুলো ছায়াছবি বানিয়েছেন বলেন তো ? একটা সিনেমা হল বানিয়েছেন বলেন তো? জাজ ডিজিটাইজ করেছে একশো ত্রিশটা, জাজের বুকের পাটা আছে বলে ‘অঙ্গার’, ‘রক্ত’র মতো বিগ বাজেটের ছায়াছবির পরিচালক হন ওয়াজেদ আলী সুমন। ভারতীয় কেউ না। তার নামে ছায়াছবি কেলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পর্যন্ত পেয়েছে। এটা কি আমাদের প্রাপ্তি নয়? ছবি চালানোর বাজার তৈরি করে জাজ ছবি বানায়, এটা কি সমস্যা? জাজকে পছন্দ না, জাজের প্রাপ্তি সাফল্য চোখে লাগছে ? তাহলে নিজেরা চলচ্চিত্র বানান, সিনেমা হলকে আধুনিকায়ন করুন। বাঁচান চলচ্চিত্রকে। আমাদের চলচ্চিত্রর বাজার বিশাল। বিনিয়োগের আগে যোগ-বিয়োগ আর কতো করবেন ?”
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
এসও