ওই তিনটি চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার পক্ষে করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (২৩ জুলাই) রুলসহ এ আদেশ দেন।
নির্মিতব্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘আমি নেতা হবো’, ‘মামলা হামলা ঝামেলা’ ও ‘কথা দিয়ে কেউ কথা রাখে না’।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন নিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার’ গত ১৮ জুলাই ওই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করে।
আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার মো. সেলিম খান। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) ও সদস্য সচিব বদিল আলম খোকনের স্বাক্ষর করা ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, চিত্রনায়ক শাকিব খান অভিনীত পুরাতন এবং নতুন কোনো ছবির শুটিংয়ের কাজে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনসমূহের কোনো সদস্যই অংশগ্রহণ করবেন না এবং শাকিব খান সংশ্লিষ্ট সকল চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখবেন। ’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার গত ২৩ জুন এক যৌথ সভায় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের আলোচনা প্রেক্ষিতে এটা প্রতীয়মান হয় যে, যে মুহূর্তে চলচ্চিত্র শিল্পের সকল সংগঠন মিলে যৌথ প্রযোজনার সরকারি নিয়মনীতি না মেনে প্রযোজনার নামে প্রতারণা করে একটি মহল ভারতীয় ছবি এ দেশে মুক্তি দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংস করার নীলনকশা তৈরি করছে, ঠিক সেই মুহূর্তে চলচ্চিত্র নায়ক শাকিব খান বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পরিবারের আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান করে কিছু ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্রনায়ক ফারুকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে কটাক্ষ ও হেয় করে গণমাধ্যমে অশালীন বক্তব্য প্রদান করেছেন, শুধু তা–ই নয়, দৃষ্টিকটু অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে স্টুপিড বলে চলচ্চিত্রের সকলকে গালি দিয়েছেন, যা গুরুতর অপরাধ। ’
এ প্রেস বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শাকিব খানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া তিন চলচ্চিত্রের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া।
পরে আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, শাপলা মিডিয়া ওই তিন চলচ্চিত্রে অনেক টাকা লগ্নি করেছেন। তাই শাকিবের সঙ্গে কাজ করা থেকে বিরত থাকার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয়তা দেখাচ্ছেন। তাই হাইকোর্টে রিট করা হয়।
তিনি বলেন, আদালত শাপলা মিডিয়ার তিন চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ওই বিজ্ঞপ্তির কার্যবকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। রুলে শাকিবের সঙ্গে কাজ থেকে বিরত থাকার বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের বিজ্ঞপ্তিটি কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
রিটে বিবাদীরা হচ্ছেন, তথ্যসচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের সভাপতি ও সদস্য সচিব, ফিল্ম ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ জন।
মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, এখন এ তিন চলচ্চিত্রের কাজে শাকিব তথা শাপলা মিডিয়াকে সবাই সহযোগিতা করতে হবে। কোনো প্রকার বাধা দেওয়া যাবে না। বিরত থাকা যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭/আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা
ইএস/এমজেএফ/এসও