ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘জনপ্রিয়তায় ভাটা আর মায়ের আচরণে আত্মঘাতী সালমান’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৭
‘জনপ্রিয়তায় ভাটা আর মায়ের আচরণে আত্মঘাতী সালমান’ সালমানের শ্বশুর শফিকুল হক হীরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: চিত্রনায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন বলে আবারও দাবি করলেন তার শ্বশুর শফিকুল হক হীরা। সঙ্গে আরো বললেন, জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়তে থাকায় মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে ফেনসিডিল এবং মদে আসক্ত হয়ে পড়েছিলো সালমান।  এছাড়া মা নীলা চৌধুরীর বেপরোয়া আচরণও মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।  এতে আত্মহননের পথ বেছে নেয় সে।  

হীরা বলেন, ‘সি (নীলা চৌধুরী) মাইট হ্যাভ ডান সো মেনি থিংস হুইচ হি (সালমান শাহ) ডিড নট লাইক।   কারণ তখন সে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য অভিনেতা।



সালমান শাহ খুন হয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবির ফেসবুকে ভিডিওবার্তা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।    এরপর নীলা চৌধুরী রুবিকে দেশে ফিরিয়ে এনে জবানবন্দি নেয়ার পাশাপাশি সালমানের শ্বশুরকেও জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন।  

সালমানের শ্বশুর শফিকুল হক হীরা।  ছবি: সোহেল সরওয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতিতে বাংলানিউজের মুখোমুখি হয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন সালমানের শ্বশুর জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা।  

হীরা বলেন, ‘আত্মহত্যা করার কারণ হল, সে (সালমান শাহ) কিছুদিনের জন্য এফডিসিতে ব্যান (নিষিদ্ধ) হয়েছিল।   ১৯৯৫ সালে।   তারপর ’৯৬’র দিকে তার অবস্থা নিচের দিকে যেতে থাকে।   ওর অভিনয়ের মান কমে যাচ্ছিল।   কারণ ও আগে ফেনসিডিল খেত।   এরপর যখন সে হুইস্কি খাওয়া আরম্ভ করে, যেহেতু তার অভ্যাস ছিল না, তার শরীর সেটা নিচ্ছিল না। ’

তিনি বলেন, সালমানের হতাশা ছিল।   আবার ‍মায়ের সঙ্গে ঝগড়া ছিল।   মায়ের সঙ্গে থাকত না।   আলাদা বাড়ি নিয়ে থাকত।   নীলা চৌধুরী জাতীয় পার্টি করতেন।   উনার সম্পর্কে যেসব কথাবার্তা আছে সেগুলো তো সবাই আপনারা জানেন।   এটার জন্য সে (সালমান) ফেড আপ ছিল।  

‘৯৬ সালে হি (সালমান) ওয়াজ স্টিল ইয়াং।   ২১ বছর আগে তার বয়স ৪২-৪৩ হয়ত ছিল।   ও একজন নায়ক।   জাতীয় পার্টি করুক কিংবা পলিটিক্সের কারণে আউট অব কন্ট্রোল হয়ে যাক, সেটা সে পছন্দ করতো না।   আর গ্রিন রোডে ওরা যখন একসাথে থাকত, মা-বাবাসহ তখন ‘সি (নীলা চৌধুরী) মাইট হ্যাভ ডান সো মেনি থিংস হুইচ হি ডিড নট লাইক’।   কারণ তখন সে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য অভিনেতা। ’ বলেন হীরা

আত্মহত্যার বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত বলেও দাবি করেন হীরা।   এই নিশ্চয়তা কিভাবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বাবা ছিলেন একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।   তিনি এটাকে অপমৃত্যু বলে স্বাক্ষর করেছেন।   এটা যে অপমৃত্যু তিনি সেটা বুঝেছেন।

‘ডিবি তদন্ত করেছে।   সামিরা (সালমানের স্ত্রী), শাবনূর (চিত্রনায়িকা) সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।   কাজের বুয়া, সালমানের পালিত বাচ্চা, তিন বছর কি সাড়ে তিন বছর বয়স ছিল, তাকে পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।   তারপর ছয় মাস পর তো ডিবি রিপোর্ট দিয়েছে যে, এটা আত্মহত্যা। ’

‘কিন্তু উনি (নীলা চৌধুরী) নারাজি দিলেন যে, ডিবি যে রিপোর্ট দিয়েছে সেটা আমরা মানি না।   তারপর সিআইডি তদন্ত করল।   দেড় বছর পর সিআইডিও একই রিপোর্ট দিল। ’
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে জনপ্রিয়তায় আলোড়ন তোলা চিত্রনায়ক শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহ’র মরদেহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছিল।  

বিপুল ভক্তের কাছে গত ২২ বছর ধরে মৃত্যুর রহস্য অমীমাংসিত থাকা মামলাটির এখন তদন্তে আছে পুলিশ ‍ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের

সালমানের শ্বশুর শফিকুল হক হীরা।  ছবি: সোহেল সরওয়ার পেনসিলভেনিয়ায় বসবাসরত রুবি ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চায়নিজ মানুষ। ’

এই ভিডিওবার্তা প্রকাশের পর সালমান শাহ’র মৃত্যুর বিষয়টি আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৭
আরডিজি/টিসি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।