** বলিউডে তার চেয়ে লম্বা অভিনেতা নেই। তিনি বিগ বি।
** রূপালি পর্দার জন্য বিজয় নামটি বেশি পছন্দ করতেন বিগ বি। এ নামে ২০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছাড়া তার পছন্দের নামের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অমিত।
** এ পর্যন্ত মোট ১০টি ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন অমিতাভ। একমাত্র ছবি ‘মহান’(১৯৮৩) এ তাকে দেখা যায় তিনটি চরিত্রে।
** অমিতাভ একমাত্র অভিনেতা যিনি কি-না তার ছবির রিমেকেও অভিনয় করেছেন। ১৯৭৫ সালে র ক্লাসিক ছবি ‘শোলে’র রিমেক হয় ২০০৭-এ। নাম দেওয়া হয় ‘রাম গোপাল ভার্মা কি আগ’। তাতে ভিলেনের চরিত্রে ছিলেন তিনি।
** ক্যারিয়ারের শুরুতে পরপর ১২টি ছবি ফ্লপ হয়েছিলো অমিতাভের। তার প্রথম হিট ছবি ‘জাঞ্জির’।
** দিল্লি থেকে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতার একটি শিপিং ফার্মের নির্বাহী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। এটি ছিলো তার প্রথম চাকরি। ৫০০ রুপি বেতন পেতেন তিনি।
** দালাল হিসেবেও কাজ করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। চলচ্চিত্র জগতে পা রাখার আগে তার শেষ বেতন ছিলো ১৬৮০ রুপি।
** কলকাতায় চাকরি করার সময় একটি সেকেন্ডহ্যান্ড ফিয়েট গাড়ি কিনেছিলেন অমিতাভ বচ্চন।
** বচ্চন নয়, অমিতাভের পদবি ছিলো শ্রীবাস্তব। কিন্তু তার বাবা নামের শেষে বচ্চন ব্যবহার করায় বচ্চন রাখেন তিনি।
** হরিবংশ রাই বচ্চন ছেলের নাম রাখতে চেয়েছিলেন ইনকালাব। কিন্তু কবি সুমিত্রা নন্দন পান্তের পরামর্শে বলিউডের এই কিংবদন্তির নাম রাখা হয় অমিতাভ।
** সুনীল দত্ত তার ছবি ‘রেশমা অর শেরা’তে তাকে প্রথম কাস্ট করেন। সুনীলের স্ত্রী অভিনেত্রী নার্গিস ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির বান্ধবী। আর অমিতাভ ছিলেন রাজীব গান্ধির বন্ধু। সেই সুবাদে অমিতাভকে ছবিতে নিতে নার্গিসকে চিঠি লেখেন ইন্দিরা। সেই ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে।
** হিন্দি ছবির এই অভিনেতার অভিষেক কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। না, অভিনয় করেননি তিনি। ১৯৬৯ সালে মৃণাল সেনের বাংলা চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন অমিতাভ। একই বছর হিন্দি ছবিতে তার অভিনয়ে অভিষেক।
** ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে অমিতাভকে। শুরুতে মুম্বাইয়ে থাকার ঘর ছিলো না তার। সে সময় মেরিন ড্রাইভ এলাকায় রাত কাটিয়েছেন তিনি। তার দুরাবস্থায় পাশে ছিলেন মিউজিক কম্পোজার কল্যাণজী আনন্দজি।
** ১৯৭৭ সালে ‘সতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে অমিতাভের কণ্ঠ ব্যবহার করেছিলেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়।
** ‘অল ইন্ডিয়া রেডিওতে’ সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। চমকপ্রদ তথ্য হলো, এরই মধ্যে সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে অমিতাভের কণ্ঠ ছিলো। সেটি পছন্দ ছিলো না রেডিও কতৃপক্ষের। এ কারণেই চাকরি পাননি তিনি।
** ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবির মধ্য দিয়ে ১৯৬৯ সালে অভিনয় জগতে পা রেখেছেন অমিতাভ। এ ছবির পারিশ্রমিক হিসেবে তাকে দেওয়া হয়েছিলো এক হাজার রুপি।
** পুণের ফিল্ম ও টেলিভিশন ইন্সটিউটে প্রথম দেখা হয়েছিলো অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চনের। অমিতাভ ও জয়া বচ্চন একমাত্র তারকা দম্পতি, যারা একসঙ্গে ৩০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন।
** ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতা হিসেবে তিনি সর্বাধিকবার মনোনীত হয়েছেন।
** ক্যারিয়ারের মধ্যবর্তী সময়ে হাতে কোনোও কাজ ছিলো না অমিতাভের। সে সময় পরিচালক যশ চোপড়ার সাথে কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। এরপর যশ চোপড়া পরিচালিত ‘মোহাব্বাতে’ ছবিতে দেখা যায় তাকে।
** ১৯৯২ সালে কিছুদিনের জন্য রূপালি পর্দার আঁড়ালে চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ। এরপর ১৯৯৭ সালে ‘মৃত্যুদাতা’র মধ্য দিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। এ সময় তাকে দেওয়া হয় বিগ বি খেতাব।
** ‘সিলসিলা’ ছবির ‘রঙ বরসে’ গানের কিছু কথা লিখেছিলেন অমিতাভ বচ্চনের বাবা হরিবশং রাই বচ্চন। এ ছাড়া ‘অগ্নিপাত’ ছবিতে অমিতাভ যে কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন সেটিও তার বাবার লেখা।
** দুই হাত দিয়েই সমানভাবে লিখতে পারেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা।
** এশিয়ার প্রথম অভিনেতা হিসেবে তার মোমের মূর্তি স্থান পায় লন্ডনের বিখ্যাত মাদাম তুসো মিউজিয়ামে। এ ছাড়া ২০০৯ সালে নিউ ইয়র্ক ও হং কংগোতে তার প্রতিমূর্তি রাখা হয়েছে।
** ২০০১ সালে ইজিপটে অনুষ্ঠিত আলেকজান্ডারিয়া ফিল্ম ফেস্টিভেলে ‘সুপারস্টার অব দ্য কান্ট্রি’ পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয় তাকে।
** ২০০১ সালে পদ্মভূষণে সম্মানিত করা হয় তাকে।
** অ্যাজমা রোগে ভুগছেন অমিতাভ। এ ছাড়া মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার বিরল রোগ মায়াসথেনিয়া গ্রেভিস রোগেও ভুগছেন তিনি।
** ১৯৮৩ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘কুলি’র একটি অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে পেটে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন অমিতাভ। সে সময় দুই সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ২০০১ সালের আলোচিত ছবি ‘আকস’-এর জন্য বিশেষ টেকনিক্যাল সহায়তায় অভিনেতা মনোজ বাজপেয়িসহ ৩০ ফুট উঁচু ঝর্ণা থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন বিগ বি। ২০০৬ সালের ‘শুট আউট এট লোখান্ডওয়ালা’তে একটানা ৫ ঘণ্টায় ২৩টি দৃশ্যে অভিনয় করে স্পটের সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন অমিতাভ।
** আরামপ্রিয় মানুষ তিনি। তার বাড়ির মেঝের জন্য ইতালি থেকে মার্বেল পাথর আনা হয়। বাথরুমের ফিটিংস এসেছে ফ্র্যান্স ও জার্মানি থেকে।
** অমিতাভ বচ্চনের দুই বাড়ি ‘জলসা’ ও ‘প্রতীক্ষা’র মূল্য ২০০ কোটি রুপি। ‘জলসা’ বাড়িটি অমিতাভকে উপহার দিয়েছিলেন পরিচালক রমেশ সিপ্পি।
** স্যুট পরতে ভালোবাসেন অমিতাভ। তার প্রিয় ব্র্যান্ড গাবানা। এ প্রতিষ্ঠান ৩০ বছর ধরে তার স্যুট তৈরি করে আসছে। পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যান্ড ফ্র্যাটেলি রসেটিটি। জানা গেছে, স্যুটের কাপড় ইতালি, সূতা ফ্র্যান্স ও বোতাম ইংল্যান্ড থেকে আনান তিনি।
** ১১টি বিলাসবহুল গাড়ি আছে অমিতাভের। পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া ‘একলব্য’ ছবিতে অভিনয়ের পারিশ্রমিক হিসেবে তাকে একটি রোলস রয়েস ফ্যান্টম উপহার দেন। তবে তার পছন্দের গাড়ি লেক্সাস। এর বিশেষত্ব, এটি বুলেটপ্রুফ।
** ঘড়ির প্রতি বেশ আগ্রহ রয়েছে বিগ বি’র। এ কারণে প্রতি উৎসব ও অনুষ্ঠানে ঘড়ি কেনেন তিনি।
** কলম সংগ্রহ করা তার শখ। অমিতাভের সংগ্রহে রয়েছে হাজারের বেশি কলম। চমকপ্রদ তথ্য হলো, জার্মানের মম ব্লা কোম্পানি প্রতি বছর অমিতাভের জন্মদিনে একটি করে কলম উপহার দেয়।
** লন্ডন ও সুইজারল্যান্ডে ঘুরতে পছন্দ করেন অভিতাভ বচ্চন।
** একবার একটি বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান ১০ দিন দৃশ্যধারণের জন্য অমিতাভকে ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন।
** রঙিন পর্দার তারকা অমিতাভ। একটি মাত্র সাদাকালো ছবিতে দেখা গেছে তাকে। নাম ‘সাত হিন্দুস্তান’।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৭
বিএসকে/এসও