বিরল প্রজাতির এক জোড়া কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের মামলায় বলিউড সুপারস্টার সালমান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের সাজা দিয়েছেন ভারতের রাজস্থান রাজ্যের যোধপুর আদালত। বিশ বছর আগের এই মামলাটির দায়ের করে স্থানীয় ‘বিশনোয়’ সম্প্রদায়ের কয়েকজন।
এই সম্প্রদায় বিশ্বাস করে গাছ কাটা ও প্রাণিহত্যা মহাপাপ। কৃষ্ণসার হরিণকে বলতে গেলে তারা পূজা করে। তাই এই ‘বিশনোয়’ সম্প্রদায় বিরল প্রজাতির এই হরিণ হত্যা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি।
২শ’ বছর আগে ভারতে কৃষ্ণসার হরিণের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ লাখের মতো। যেখানে ২০১০ সালে সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৫০ হাজারে। আর তাই প্রাণি সংরক্ষণ আইনে কৃষ্ণসার বা ‘চিংকার’ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার।
হরিণ শিকার মামলায় ৭ এপ্রিল শনিবার জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ‘সুলতান’ অভিনেতা। সালমানের মুক্তিতে তার অনেক ভক্ত ও অনুসারী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। অনেকে আবার আদালত ও কারাগারের সামনে আতসবাজি পুড়িয়ে উল্লাস করে।
তবে তার মুক্তিতে খুশি হতে পারেননি প্রাণিপ্রেমীরা। তাদের কারোর কারোর দাবি, সালমানের মতো সেলিব্রেটিরা যখন এমন অপরাধ করেন তখন তা ক্ষমার অযোগ্য। কারণ বহু মানুষ তাদের আদর্শ মেনে অনুসরণ করেন। তাদের কাজ অনুসরণ করেন এমন ভক্তের সংখ্যাও বিশাল বিপুল। তাই তাকে অনুসরণ করে যদি তার ভক্তরা প্রাণিহত্যা বা বিরলপ্রজ কৃষ্ণসার হরিণ হত্যায় লিপ্ত হন, তখন তা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটাবে। এমন জনপ্রিয় তারকা ব্যক্তিদের থেকে এই ধরনের অপরাধ কখনই কাম্য নয়।
শুধু পশুহত্যা নয়, সালমান খানের বেপরোয়া জীবন-যাপন নিয়ে নানা সময় নানা অভিযোগ ওঠে। কখনো কখনো তুচ্ছ কারণে মানুষকে মারধর করা, আবার কখনোবা বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে রাস্তার ধারে ঘুমন্ত ঘরহীন মানুষ হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত তিনি।
বেশ ক’বছর আগে ঘুমন্ত ফুটপাতবাসী মানুষকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-খ্যাত এই অভিনেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তবে ফুটপাতে গাড়ি উঠিয়ে মানুষ হত্যার ওই মামলাটি বেশিদিন টেকেনি। তবে হরিণ শিকার মামলা তাকে বারবার টেনে নিয়ে গেছে জেলের চার দেয়ালের ভেতর। চলচ্চিত্রের পর্দায় তিনি নায়ক হলেও দিনকে দিন বাস্তবের খলনায়ক হয়ে উঠেছেন তিনি। নানা উল্টোপাল্টা কাজ তাকে ভালোবাসার সিংহাসন থেকে একটু একটু করে অপছন্দের খাদের কিনারে নিয়ে গেছে। কারো কারো চোখে তিনি এখন ঘৃণার পাত্র। আর সেজন্য তিনিই দায়ী। সে দায় এড়ানোর যো নেই তার।
বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৮
জেআইএম/জেএম