কারাগারের পাঁচটি দিন কেমন কেটেছে? প্রশ্নটি হয়তো ভক্তদের মনে ঘুর ঘুর করছে? কিন্তু নিজ থেকেই ‘কয়েদি নম্বর’সহ সেই অভিজ্ঞতার কথা ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন আসিফ আকবর।
বুধবার (১৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের টাইমলাইনে এক স্ট্যাটাসে সেই অভিজ্ঞতার কথা ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করলেন তিনি।
আসিফ লিখেছেন, ‘আমি কয়েদী নাম্বার ২৫০২৭। কারাগারের উঁচু প্রাচীরগুলো ভয় জাগানিয়া। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঢুকলাম কারা হাসপাতালের কেবিনে। একজন মুরুব্বীর নেতৃত্বে মাগরিবের নামাজের জামাত চলছে। বাইরে ঝোলানো ভয়ানক তালা, ঢুকতে হলো চার দেয়াল আর লোহার গারদ বেষ্টিত কক্ষটিতে। মনে হচ্ছিলো- বাবা মা হারিয়ে ফেলা অনাথ আশ্রমে আশ্রয় পাওয়া এক এতিম আমি। নামাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে চারদিকের মাপ নিচ্ছিলাম। নামাজ শেষে মাথা নীচু করে হেঁটে গেলাম আমার জন্য রাখা নির্ধারিত বিছানায়। শত সহস্র অনুসন্ধিৎসু চোখের আড়ালে নিজেকে লুকানো অসম্ভব। চোখ ভিজে আসতে চাইছে। দৃঢ়তা আর সততার ট্যাবলেট খাওয়া সিদ্ধান্ত- নাহ...পানি বের হতে দেয়া যাবে না, শুধু রক্তই বেরুতে পারে। ’
‘ব্যাগটি রেখে গোসলে গেলাম। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তাড়াহুড়োয় আনা হয়নি, এগিয়ে এলো আরেক কয়েদী প্লাস রাইটার- শাওন। তার অধীনেই চলে এই অবরুদ্ধ কক্ষটি। সবাই তাকাচ্ছে আমার দিকে, আমি কুঁকড়ে আছি নতুন পরিচয় হজমের আতঙ্কে। কবে আসবে রূপকথার ফিনিক্স পাখিটা! আর কতোদিন গল্প শুনে যেতে হবে! আমিই তো ফিনিক্স, আজন্ম এক যোদ্ধা, আমার অদম্য অগ্রযাত্রা থামবে শুধু মৃত্যুতেই...। ’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মুহূর্তেই ঝেড়ে ফেললাম অতীত, মুখে নিয়ে আসলাম বিজয়ীর হাসি। সবার সঙ্গে হাত আর বুক মেলানো শুরু করলাম। কিছু কয়েদী এগিয়ে এলেন, আর কিছু আছেন অবজারভেশনে। এর মধ্যে খুনে চোখ, অসহায় চোখ, ভালোবাসার চোখ, সন্দেহের চোখ, করুণার চোখ, নেশার চোখ, বন্ধুত্বের চোখ- সবই আছে। নানান চোখের নানান ভাষা, ওগুলো পরেও পড়া যাবে। সারাদিন কিছু খাইনি, আগে একটু খেয়ে নিই, অনেক ক্ষুধা পেয়েছে…। চলবে…। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
বিএসকে/এমএ