ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

ঢোলবাদক বিনয় বাঁশী জলদাসের ১০৯তম জন্মবার্ষিকী

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৯
ঢোলবাদক বিনয় বাঁশী জলদাসের ১০৯তম জন্মবার্ষিকী

উপমহাদেশের প্রখ্যাত ঢোলবাদক একুশে পদকপ্রাপ্ত বাদনশিল্পী বিনয় বাঁশী জলদাসের ১০৯তম জন্মদিবস ১ অক্টোবর। এদিন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বিনয়বাঁশী শিল্পীগোষ্ঠীর উদ্যোগে দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করা হবে। 

বোয়ালখালী পৌরসভায় অবস্থিত এই গুণী শিল্পীর বাস্তুভিটায় সমাধি প্রাঙ্গণ ভাস্কর্য চত্বরে দিনটি অনাড়ম্বরভাবে উদযাপন করতে উদ্যোগ নিয়েছে তারই স্মরণে প্রতিষ্ঠিত লোক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিনয় বাঁশী শিল্পীগোষ্ঠী।

এদিন সকাল দশটায় বিনয় বাঁশী শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য, শ্রদ্ধা নিবেদন ও কেক কাটা হবে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নুরুল আলম এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক জহুরুল ইসলাম জহুর। উক্ত অনুষ্ঠানকে সাফল্য মন্ডিত করার জন্য সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বাবুল জলদাস, সভাপতি উত্তম কুমার বড়ুয়া, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শ্রী বিপ্লব জলদাস, কোষাধ্যক্ষ বিধান দাস, সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠান সার্থক ও সফল করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

১৯১১ সালের ১ অক্টোবর বাদনশিল্পী বিনয় বাঁশী জলদাস বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদন্ডী ছন্দারীয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ঢোলবাদনের নৈপুণ্য সৃষ্টি করেছিলেন তিনি।

বিনয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত কবিয়াল রমেশ শীলের সাথে ঢোল বাদনে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর রমেশের সাথে ঢোল বাজান। ১৯৪৫ সালে বিনয় রমেশের সাথে কলকাতার মোহাম্মদ আলী পার্কে অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে অনুষ্ঠিত যুদ্ধবিরোধী শান্তির কবিগানে যোগ দেন তিনি। এরপর ১৯৪৮ সালে কলকাতার শ্রদ্ধানন্দ পার্কে অনুষ্ঠিত কবিয়াল রমেশ শীলের শ্রেষ্ঠ কবিয়াল শিরোপা জেতার অনুষ্ঠানেও অংশ্রগ্রহণ করেন।

১৯৫৬ সালে বিনয় বাঁশী জলদাস কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলন ও ঢাকার কার্জন হলের সাংস্কৃতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯–৭০ সালে তিনি রায়গোপাল ও ফণী বড়ুয়ার দোহার হিসেবে সারা বাংলায় সফর করেন। ১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আমন্ত্রণে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় সংস্কৃতি সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। ১৯৯০ সালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উদীচীর লোকসংস্কৃতি উৎসবে ঢোল বাজান। ১৯৯৯ সালে তিনি ঢোল বাজিয়ে যশোরে অনুষ্ঠিত উদীচীর জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন। ২০০০ সালে গুরুতর অসুস্থ থাকার পরও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন তিনি।

২০১৩ সালে ৬ এপ্রিল বিনয় বাঁশীর বাস্তুভিটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর ডি কে দাশ মামুন এই গুণী বাদনশিল্পীর ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। এটি নির্মাণ করতে সময় লাগে ১ বছর।

যন্ত্রসংগীতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার বিনয় বাঁশী জলদাসকে ২০০২ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০০২ সালের ৫ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯
এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।