আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান এই গায়িকা ফেসবুকে এক শোক বার্তায় বলেন, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সংগীত অঙ্গনের এক বলিষ্ঠ মানুষকে বিদায় জানাচ্ছি। যাকে মেলোডিয়াস কণ্ঠ ও হৃদয়ে ঝড় তোলা গান অমর করে রাখবে।
সোমবার (০৬ জুলাই) কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন এই নন্দিত গায়ক। সেখানে গিয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে ছিলেন তিনি। গত ১১ জুন একটি বিশেষ ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর তিনি রাজশাহীতে বসবাস করছেন।
>>>চলে গেলেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর
এন্ড্রু কিশোর বাংলাদেশে ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত। কয়েক হাজার সিনেমার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙের ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’ প্রভৃতি।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে প্রাথমিকভাবে সংগীত পাঠ গ্রহণ শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। মুক্তিযুদ্ধের পর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোক ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওতে তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
>>>এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান রাজশাহী
এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে আলম খান সুরারোপিত ‘মেইল ট্রেন’ সিনেমার ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানটি। এরপর ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’তে কণ্ঠ দেন। এরপর বেশ কিছু গান তাকে পরিচিত করে তোলে। তবে তুমুল জনপ্রিয়তা পান বেলাল আহমেদের ‘নয়নের মনি’ সিনেমার গান দিয়ে।
ওই সিনেমার পুরো অ্যালবামই হিট, পরে কলকাতায় রিমেকও হয়। সারেন্ডার, ক্ষতিপূরণ, পদ্মা মেঘনা যমুনা, কবুল, আজ গায়েহলুদ, সাজঘর, কি যাদু করিলা সিনেমায় কণ্ঠ দিয়ে মোট আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এ ছাড়া অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২০
এনটি