সুশান্ত সিং রাজপুতের মামলা এখন তদন্ত করছে সিবিআই। আর এরই মধ্যে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আসছে অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।
রিয়া চক্রবর্তী, তার ভাই সৌহিক চক্রবর্তী এবং শ্রুতি মোদিকে আলাদা আলাদা ঘরে জেরা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে আবারও রিয়াকে জেরার জন্য ডাকা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে একটি, দুটি নয়, এরকম একাধিক প্রশ্ন উঠেছে সুশান্তের প্রাক্তন প্রেমিকার গতিবিধি নিয়ে। যেগুলো শেয়ার করে সামাজিক মাধ্যমে বর্তমানে বেজায় শোরগোল শুরু হয়েছে।
এক বছরে সুশান্তের সঙ্গে রিয়ার কথা হয়েছে ১৪৫ বার। সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডার সঙ্গে রিয়ার কথা হয় ২৮৭ বার।
প্রথমত, সুশান্তের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তে আপত্তি তুলেছেন রিয়া। তার কথায়, এই মুহূর্তে সিবিআই তদন্ত বেআইনি এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসছে ততক্ষণ সিবিআই তদন্ত শুরু করতে পারে না। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী। তার প্রশ্ন, সুশান্তের মৃত্যুর হয়েছে মুম্বাইতে, তাই মুম্বাই পুলিশের বদলে বিহার পুলিশ এবং সিবিআই কীভাবে এই মামলার তদন্ত করতে পারে?
রিয়ার আয় কম, অথচ মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় ২টি ফ্ল্যাট, বিলাসবহুল জীবন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাসে ১৪ লক্ষ টাকা আয় হওয়া সত্ত্বেও খাস মুম্বাইয়ের বুকে কীভাবে দুটি বিলাসবহুল সম্পত্তি রয়েছে রিয়া চক্রবর্তীর নামে। অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট নিতে হলে, মাসিক যে আয় থাকা দরকার, রিয়ার নিজস্ব অ্যাকাউন্ট বলছে তার আয় মোটেই ততটা নয়। উপরন্তু এত সম্পত্তি, টাকাপয়সা, অভিজাত জীবনযাপনই বা কী করে করতেন রিয়া?
মামলা হাতে নিয়েই রিয়া ও সুশান্তের সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নজরদারি চালিয়েছে ইডি। তাতেই দেখা গেছে, গতবছর রিয়ার অ্যাকাউন্টে ছিল ১০ লাখ টাকা। সেখান থেকে ১২ লাখ ও শেষ পর্যন্ত ১৪ লাখ হয়েছিল তার নগদ টাকার পরিমাণ। এই আয়ে কী করে মুম্বাইয়ের দু’টি অভিজাত এলাকায় কোটি টাকার দু’টি ফ্ল্যাট কিনলেন রিয়া ও তার পরিবার? জানা গেছে, মুম্বাইয়ের খারে ৮৫ লক্ষ টাকার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার নামে।
শেষ কয়েক মাসে নাকি রিয়াকে মারাত্মক ভয় পেতে শুরু করেছিলেন সুশান্ত। লাগামছাড়া খরচ কোথায় হচ্ছে, তা নিয়ে সিদ্ধার্থ পৈঠানিকে খোঁজ নিতে বললে রিয়া অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। পুরোপুরি তার নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছিলেন সুশান্ত। এপ্রসঙ্গে সুশান্ত ঘনিষ্ঠদের সবাই একমত। উপরন্তু গতবছর নভেম্বরে বিদেশে থাকা রানি দিদির বাড়ি যেতে চাইলে সুশান্তকে জোর করে আটকে রাখেন রিয়া। জানুয়ারি মাসে সুশান্ত বাড়িতে ফোন করে বলেছিলেন রিয়া তাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠাতে চাইছে।
অভিযোগ উঠেছে, সুশান্তের মৃত্যুর পর তার ইমেলও ব্যবহার করেছেন রিয়া চক্রবর্তী। সুশান্ত শেষপর্যন্ত কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন প্রথমে তা খুটিয়ে দেখেন রিয়া। সুশান্ত কোথায় কী মেল করেছেন, এরপরই ইমেলের পাসওয়ার্ড বদলে দেন। যাতে সুশান্তের পরিবারের কেউ তা না খুলতে পারেন। এছাড়াও সুশান্তের ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথিও রিয়া ডিলিট করে দেন। মুছে ফেলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইমেলও।
গত এক বছরে ভাই সৌহিকের সঙ্গে রিয়ার কথা হয়েছে ১০৬৯ বার। অন্যদিকে, গত এক বছরে সুশান্তের সঙ্গে রিয়ার কথা হয়েছে ১৪৫ বার। সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডার সঙ্গে রিয়ার কথা হয় ২৮৭ বার। যা সুশান্তের তুলনায় অনেকটাই বেশি। ৭৯১ বার কথা বলেছেন ম্যানেজার শ্রুতি মোদীর সঙ্গে। বন্ধু সিদ্ধার্থ পৈঠানির সঙ্গে কথা হয়েছে ১০০ বার। পরিচারক দীপেশ সাওয়ান্তের সঙ্গে কথা হয়েছে ৪১ বার এবং সুশান্তের রানি দিদির সঙ্গে ১ বছরে মাত্র ৪ বার কথা হয়েছে। অন্যদিকে, মহেশ ভাটের সঙ্গে কথা হয় ১১ বার। অভিনেতা আদিত্য রয় কাপুরের সঙ্গে কথা হয় ২৩ বার। সুশান্তের বর্তমান ম্যানেজার উদয় সিং গৌরীর সঙ্গে কথা হয় রিয়ার ২২বার। এসবের পাশাপাশি ড্রিম হোম রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সঙ্গে ২৩ বার কথা হয়েছে। সব মিলিয়ে রহস্য অনেকটাই ঘণীভূত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২০
এমকেআর