বলিউডের বেশ কিছু সেলেব্রিটি নকল ভক্তসংখ্যা দিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছেন। সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশের এক তদন্তে এমন তথ্যই জানা গেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
সামাজিক মাধ্যমে সেলেব্রিটিদের যে এতো লক্ষ-কোটি ফলোয়ার, তার সবটাই কি আসল? না কি আসল-নকলে মিলেমিশে একটি ম্যাজিক সংখ্যা তৈরি করে? তারকাদের ফেক ফলোয়ারের কথাটা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির ওপেন সিক্রেট। তবে সেই গোপন বাক্স এবার হাটে হাঁড়ি ভাঙলো। সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশের একটি তদন্তে জানা গেছে, বলিউডের বেশ কিছু সেলেব্রিটি নকল ভক্তসংখ্যা দিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছেন। কেউ ভিডিওতে লাইক বাড়াচ্ছেন, কারও এনডর্সমেন্টে লাভের অঙ্ক বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে গায়ক বাদশাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
সম্প্রতি বাদশার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি ৭২ লাখ রুপি দিয়ে নকল ফলোয়ারের মাধ্যমে তার মিউজ়িক ভিডিওর ভিউ সংখ্যা বাড়িয়েছেন। মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাদশা অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ফেক ফলোয়ারের মাধ্যমে নিজেদের জনপ্রিয়তা বজায় রাখার কাণ্ডে নাকি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং দীপিকা পাড়ুকোনের মতো অভিনেত্রীর নামও রয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কার অনুগামী সংখ্যা ছ’কোটির কাছাকাছি, দীপিকার পাঁচ কোটির সামান্য বেশি। কিছুদিন আগে ইনস্টাগ্রামের প্রভাবশালী তারকার তালিকায় প্রিয়াঙ্কা ভারতীয়দের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেন।
এই ফলোয়ারের সংখ্যার দৌলতেই তারকাদের ছবি-ভিডিওতে লাইক বেশি হয়, যার প্রভাব সরাসরি পড়ে তাদের ব্র্যান্ড এনডর্সমেন্টের উপরে।
শুধু ইনস্টাগ্রাম নয়, টুইটার এবং ফেসবুকের ভক্তসংখ্যাও সন্দেহের বাইরে নয়। অনেক তারকা যেমন নিজেই সামাজিকমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট সামলান। অনেকে সংস্থার মাধ্যমে কাজ করান। তবে নিজে পোস্ট করলেও প্রায় সকলেরই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার রয়েছে। তেমনই কিছু এজেন্সিও রয়েছে, যারা নকল প্রোফাইল তৈরি করে এবং তা এমনভাবে চালায়, যে চট করে বোঝা মুশকিল সেটি আসল না নকল। টাকার বিনিময়ে তারকারা এসব ফেক প্রোফাইল কেনেন এবং নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করেন বলে শোনা যায়। অনেক সময়ে সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া নিজেদের উদ্যোগেই ফেক প্রোফাইল ডিলিট করে দেয়। তবে কিছু দিন পরে আবারও অসংখ্য নকল অ্যাকাউন্ট গজিয়ে ওঠে।
ফেক প্রোফাইল নিয়ে হঠাৎ করে আলোড়ন ওঠার নেপথ্যে দু’টি ঘটনা আছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর বাদশার মিউজ়িক ভিডিয়ো ‘পাগল হ্যায়’ মুক্তি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭.২ কোটি ভিউ পায়, যা টেইলর সুইফট বা বিটিএস-এর মতো ব্যান্ডের রেকর্ডকেও ভেঙে দেয়। এর পরেই নাকি বাদশার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে।
রোববার (৯ আগস্ট) মুম্বাই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নন্দকুমার ঠাকুর বলেন, ‘গায়ক স্বীকার করেছেন যে, তিনি রেকর্ড তৈরির জন্য একটি এজেন্সিকে দিয়ে ৭২ লাখ রুপির বিনিময়ে তার অ্যালবামে ভিউসংখ্যা বাড়িয়েছিলেন। ’ তবে এর একদিন আগেই (শনিবার) বাদশা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা।
অন্য দিকে, সেলেব্রিটিদের উপরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত যে ট্রোলিং চলে, তা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে মুম্বাই পুলিশের কাছে। সেসব অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ফেক প্রোফাইলের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি ট্রোলিং চলে। বলিউডের অনেক তারকার প্রোফাইলে নজরদারিও চালানো হয়। সেই সূত্রেই নাকি প্রিয়াঙ্কা ও দীপিকার নাম উঠে এসেছে। তবে দুই নায়িকাই এ ব্যাপারে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২০
এমকেআর