ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

সুশান্তের মৃত্যুর দিন যে কথা হয় মহেশ ভাটের সঙ্গে রিয়ার

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
সুশান্তের মৃত্যুর দিন যে কথা হয় মহেশ ভাটের সঙ্গে রিয়ার রিয়া ও মহেশ ভাট

এরই মধ্যে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামালর মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তী ও মহেশ ভাটের মধ্যেকার বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) রাতে তাদের মধ্যাকার চ্যাট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নেটিজেনদের রোষের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এই দুই ব্যক্তিত্ব।

 

গত ৮ জুন রিয়া সুশান্তের অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে চলে যান। সেই দিন মহেশ ভাটকে পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সুশান্তের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ’র পূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন রিয়া। মহেশ ভাটের কথাতেই যে সুশান্তের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন রিয়া তেমন ইঙ্গিতও মিলেছে। এবার সামনে এল রিয়া-মহেশের আরও কিছু গোপন কথোপকথন।  তাও আবার ১৪ জুনের, যেদিন সুশান্তের মৃত্যু হয়! 

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে তাদের মধ্যাকার ৯ জুন থেকে ১৫ জুনের কথোপকথন প্রকাশ করেছে। ১০ জুন রিয়াকে একটি ছবি ফরোয়ার্ড করেন মহেশ ভাট। লেখেন, ‘কোনও কোনও সময় কোন জিনিসটা ঠিক কী রকম, তা দেখার জন্য তোমাকে এক পা পিছাতে হয়, এবং তারপর আরও কিছু পা.. তারপর আরও কিছু। ’ রিয়া জবাবে লেখেন, ‘খুব সত্যি। আমি ধীরে ধীরে নিজের চৈতন্য খুঁজে পাচ্ছি। শুভ সকাল। ’

১২ জুন মহেশ ভাট আরও একটি মেসেজ পাঠান রিয়াকে। সেখানে লেখেন, ‘একাকীত্ব আমাদের জীবনের শিল্পী সত্ত্বাকে বিকশিত করতে একটা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে, জন্ম নেয় প্রকৃত সত্ত্বার। ’

১৪ জুন (সুশান্তের মৃত্যুর দিন) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে রিয়া মেসেজ করেন মহেশ ভাটকে। লেখেন, ‘শুভ সকাল, স্যার…। আমি দাবি করছি, আমার এনার্জির সেই ডোজ, যা আমি পাই আপনার মর্নিং উদ্ধৃতিগুলো থেকে, যা তুমি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাও। ব্যাস এইটুকুই, লাভ ইউ। ’ মহেশ ভাট জবাবে লেখেন, ‘অনুভূতি আসে যায়…, নীল আকাশে জমা মেঘের মতো, বুঝে শুনে নি:শ্বাস নিতে হয়। ’ এরপর যোগ করেন ‘তোমায় ভালোবাসি আমার সন্তান। ’ অন্য দিক থেকে রিয়া লেখেন, ‘লাভ ইউ স্যার, আমার দেবদূত। ’

সুশান্তের মৃত্যুর খবর প্রকাশ পাওয়ার পরই মহেশ ভাটকে টেক্সট করেন রিয়া। ২ টা ৩৫ মিনিটে রিয়ার ফোন থেকে মহেশ ভাটের কাছে মেসেজ যায়, ‘কল মি। ’ কিন্তু জবাবে কোনও মেসেজ আসেনি। যদিও বিকাল ৪ এবং ৫ টার সময় দু’বার রিয়াকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেন মহেশ ভাট। ’

ভাইরাল মহেশ-রিয়ার ৮ জুনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট৮ জুনে মহেশ-রিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং ছিল আরও ভয়ঙ্কর (এর ঠিক ৬ দিনের মাথায় উদ্ধার হয় সুশান্তের মরদেহ)। যে মেসেজে স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে সুশান্তের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করার ইঙ্গিত এবং এই সম্পর্ক ভেঙে ফেলার ব্যাপারে রিয়াকে উপদেশ দিয়েছিলেন মহেশ ভাট।

রিয়া লেখেন, ‘আয়েশা (জলেবি ছবিতে রিয়ার চরিত্রের নাম) মুভস অন..স্যার, মন ভারাক্রান্ত তবে একটা স্বস্তি। ’ এরপর রিয়া যোগ করেন, ‘আমাদের শেষ ফোনালাপ আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছে। তুমি আমার স্বর্গদূত, তুমি ছিলে, তুমি আছো এবং তুমিই থাকবে। ’

এর জবাবে মহেশ ভাট লেখেন, পেছনে ফিরে তাকিও না। যা হবার তাই হবে। আমার অনেক ভালোবাসা তোমার বাবাকে। তিনি আজ নিশ্চয় অনেক খুশি। ’ এর উত্তরে রিয়া লেখেন, ‘অবশেষে একটু সাহস খুঁজে পেলাম। আর সেইদিন তুমি আমার বাবাকে নিয়ে ফোনে যা বলেছিলে, সেটা আমাকে শক্ত হতে সাহায্য করেছে। তিনিও তোমাকে অনেক ভালোবাসা জানিয়েছেন, ধন্যবাদ সবসময় পাশে থাকার জন্য। ’ 

এরপর ‘সড়ক ২’র পরিচালক লেখেন, ‘আমার হালকা লাগছে। ’ এরপর রিয়া মেসেজ করেন, ‘আহ.. কোনও শব্দ নেই স্যার। সেটাই সেরা ইমোশন, যা আমি তোমার জন্য অনুভব করি। ’ মহেশ ভাট এরপর লেখেন, ‘তুমি সাহাসী..এজন্য তোমাকে ধন্যবাদ। ’

রিয়া এবার লেখেন, ‘তুমি ফের আমার ডানা মেলতে সাহায্য করলে, একই জীবনে দু’বার- ঠিক ভগবানের মতো। ’ অপর একটি মেসেজে রিয়া লেখেন, ‘ধন্যবাদ, আমরা ভাগ্যকে যে তোমার সঙ্গে আমাকে মিলিয়ে দিয়েছে। তুমি ঠিক বলেছে, আমাদের দেখা হওয়াটা এই দিনের জন্যই। কোনও সিনেমার জন্য নয়, খুব স্পেশাল কিছুর জন্য। তোমার প্রত্যেকটা শব্দ আমার কানে প্রতিধ্বনিত হয়েছে, আমার মনে তোমার নিঃশর্ত ভালোবাসার একটা গভীর প্রভাব কাজ করে। ’

সুশান্তের ‘আত্মহত্যার’ কারণ খতিয়ে দেখতে মুম্বাই পুলিশ মহেশ ভাটের বক্তব্য রেকর্ড করে। এই মামলায় মুম্বাই পুলিশ মোট ৫৬ জনের বক্তব্য রেকর্ড করেছে। মুম্বাই পুলিশকে দেওয়া বক্তব্যে মহেশ ভাট জানিয়েছেন, সুশান্তের সঙ্গে জীবনে দু’বার তার দেখা হয়েছে। মহেশ ভাট পুলিশকে আরও জানান, সুশান্ত নিজে থাকতেই ‘সড়ক ২’র অংশ হতে চেয়েছিলেন এবং মহেশ ভাটের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন।  

অন্যদিকে, সুশান্তের মৃত্যুর দিনই মহেশ ভাটের দাদা মুকেশ ভাট টাইমস নাও’কে দেওয়া এক টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছিলাম, এরকম একটা কিছু আসছে। ’ কীভাবে সেই ধারণা গড়ে উঠেছিল, তারও ব্যাখ্যা দেন মুকেশ।

তিনি বলেন, ‘মহেশ আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি পারভিন ববির সঙ্গে, সে সিজোফ্রেনিয়ার শিকার ছিল। আমার ভাবতাম, সুশান্ত পারভিন ববির রাস্তায় হাঁটছে। তাই আমি শকড নই, এটা হওয়ার ছিল। ’ 

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। বুধবার (১৯ আগস্ট) বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ খারিজ করে দিল এই মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর পিটিশন।

বিচারপতির রায়ে জানানো হয়েছে, সুশান্তের মৃত্যুর পর মুম্বাই পুলিশ এই মামলার আইগত অনুসন্ধান করেছে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, মুম্বাই পুলিশ এই মামলায় সিবিআই’কে সহযোগিতা করতে বাধ্য থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।