বাবা-মার কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে তার সন্তানেরা। কিন্তু সেই প্রিয় মানুষদেরই খুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলেন এক ইরানী দম্পতি!
৪৭ বছর বয়সী ইরানী চলচ্চিত্র পরিচালক বাবাক খোররামদিনের সঙ্গে তারই এক ছাত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ঘটনাটি ঘটেছে ইরানের তেহরানে। ছেলে অবিবাহিত থাকায় সমাজে দুর্নাম হচ্ছিল বলে মনে করেন ওই বাবা-মা। তাই তারা ওষুধ প্রয়োগের পর শ্বাসরোধ করে ছেলেকে খুন করে মরদেহ কেটে থলিতে ভরে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেয়।
প্রথমে তাদেরই এক প্রতিবেশী আবর্জনার স্তূপে খণ্ডিত দেহের অংশ দেখতে পান। এরপর তিনি পুলিশকে খবর দিলে পশ্চিম তেহরানের একবাতান শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হাত উদ্ধার করা হয়। পরে আঙ্গুলের ছাপ থেকে বাবাক খোররামদিনে পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
তেহরান আদালতের বিচারপতি মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানিয়েছেন, সন্তানকে হত্যার দায় বাবা কবুল করেছেন। ছেলেকে ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে স্ত্রীর সহযোগিতায় খুন করেন তিনি। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহ কেটে থলিতে পুরে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। এ ঘটনায় তাদের কোনো অনুশোচনা নেই।
শুধু ছেলেকে নয়, এই প্রবীণ দম্পতি কয়েক বছর আগে একই কায়দায় তাদের মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে হত্যা করার কথাও স্বীকার করেছেন। তারা দাবি করেন, তাদের মেয়ে মাদকাসক্ত ছিলেন এবং তাদের জামাই আপত্তিজনক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। যা সহ্য করতে না পেরে তাদেরকেও হত্যা করেছেন।
‘ক্রেভাইস’ ও ‘ওথ টু ইশার’-এর মতো স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনা করে প্রশংসিত হয়েছিলেন বাবাক খোররামদিন। ২০০৯ সালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিনেমায় মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
এদিকে বাবা-মা দ্বারা ছেলে ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ইরানে। এমন ঘটনায় আইন ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির সাধারণ জনগণ। দেশটিতে সন্তান হত্যার শাস্তি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড। তবে মেয়ের জামাইকে হত্যার কারণে ওই বাবা-মা’র মৃত্যুদণ্ড হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২১
জেআইএম