বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনেও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন জায়েদ খান। ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কেন্দ্রীক জটিলতা শেষ হয়নি।
সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী জায়েদ খানের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছেন প্রতিপক্ষ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। পাশাপাশি কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচিত চুন্নুর বিরুদ্ধেও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
নির্বাচন কেন্দ্রীক জটিলতা নিষ্পত্তি করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর নির্বাচনের আপিল বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে শনিবার (৫ জানুয়ারি) বিষয়টির সুরাহা করতে বিকেল ৪টায় শিল্পী সমিতির অফিসে জরুরি বৈঠক ডেকেছে এই বোর্ড।
জানা যায়, সেখানে উপস্থিত থাকার জন্য অভিযোগকারী নিপুণ, অভিযুক্ত জায়েদ খান ও চুন্নু, দুই নির্বাচন কমিশনার জাহিদ হোসেন ও বি এইচ নিশান এবং শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন নির্মাতা সোহানুর রহমান। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা সুন্দর একটি সমাধান দেব। আপিল বোর্ড একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা দুই পক্ষকে নিয়ে বসব, অপরাধ না থাকলে কেউ যেন শাস্তি না পায় আর প্রকৃত অপরাধী যেন শাস্তি পায়, আমরা সেভাবেই বিষয়টি দেখব।
তবে শুক্রবার জানা গেছে, আপিল বোর্ডের বৈঠকে যাচ্ছেন না জায়েদ খান। উল্টো আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানসহ চারজনকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন চিত্রনায়ক তিনি। সোহান ছাড়া বাকিরা হলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আপিল বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ব্যারিস্টার মুজিবুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এই আইনি নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
শিল্পী সমিতির নির্বাচনের তফসিলের ১৩ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে, নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে আপিল বোর্ডের কাছে পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে আপত্তি দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি। আপিল দাখিলের সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। একই তারিখ বিকেল ৫টায় আপিল শুনানি ও নিষ্পত্তি করতে হবে।
২৯ জানুয়ারির পর আপিল বোর্ডের কার্যক্রম অবৈধ উল্লেখ করে জায়েদ খান বলেন, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটার পর থেকে আপিল বোর্ড মেয়াদ উত্তীর্ণ। একটি মেয়াদোত্তীর্ণ সংস্থা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে লেগেছে, যার কোনো আইনগত ভিত্তিও নেই।
এখন দেখার অপেক্ষা, নির্বাচনের তফসিলের ধারা, আপিল বোর্ডের বৈঠক এবং জায়েদ খানের উল্টো আইনি নোটিশ- সব মিলিয়ে ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয়। শিল্পী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্রীক জটিলতার সুন্দর সমাধান হবে নাকি কাঁদা ছোড়াছুড়ি আরও বাড়বে?
২৮ জানুয়ারি (শুক্রবার) উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ছাড়াও সহ-সভাপতি পদে মাসুম পারভেজ রুবেল ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শাহানূর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মামনুন ইমন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে জয় চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ পদে আজাদ খান নির্বাচিত হন।
কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন- অঞ্জনা সুলতানা, অরুণা বিশ্বাস, অমিত হাসান, আলীরাজ, কেয়া, চুন্নু, জেসমিন, ফেরদৌস, মৌসুমী, রোজিনা ও সুচরিতা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২২
এনএটি