ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

যে কারণে গান ছাড়তে চেয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
যে কারণে গান ছাড়তে চেয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী

কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকর ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পর এবার চলে গেলেন আরেক কিংবদন্তী বাপ্পি লাহিড়ী। যিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক।

একসময় তার সুর দেওয়া গান মানেই ছিল নতুন ট্রেন্ড।

‘ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘ড্যান্স ড্যান্স’ ছবির গানে আজও মুখর ক্লাব, ডিস্কো। তার সুরে পা স্থির রাখা কঠিন। বিশেষ করে ৭০ থেকে ৮০-এর দশকে শ্রোতাদের এমনই মুগ্ধ করে রেখেছিলেন তিনি।

তবে শুধু ডিস্কো গানেই নয়, স্মরণীয় সব রোমান্টিক গানও করেছেন তিনি। বাংলা ছবি ‘অমরসঙ্গী’র ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ তো এখনও শ্রোতাদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। তবে সেই বাপ্পি লাহিড়ীই একবার ঠিক করেছিলেন ছেড়ে দেবেন সংগীত জগত! আর এর নেপথ্যের কারণ ছিল কিশোর কুমার।

মোহাম্মদ রফি ও কিশোর কুমারের সঙ্গে তরুণ বাপ্পি লাহিড়ী

কিশোর কুমারকে মামা বলে ডাকতেন বাপ্পি লাহিড়ী। তার সুরে একের পর গান গেয়েছেন কিশোর কুমার। সেসব গান আজও মানুষের মুখে মুখে। আর সেই কিশোর কুমারের প্রয়াণের পর ভেঙে পড়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কোনোদিন গানে সুর দেবেন না। পরে অবশ্য অনুরাগীদের কথা ভেবে সে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয় তাকে।

মাত্র ১৯ বছর বয়সে কলকাতা থেকে তৎকালীন বোম্বে বা আজকের মুম্বাইয়ে পাড়ি দেন বাপ্পি লাহিড়ী। বলিউডে শুরু করেন সুরের যাত্রা। ১৯৭৩ সালে ‘ননহা শিকারি’ ছবির মাধ্যমে সুরকার হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু। প্রথম থেকেই সবার নজর কেড়ে নেন তিনি। এর আগে ১৯৭২ সালে বাংলা ছবি ‘দাদু’তে সুর দিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী।

সোনার লকেট পরিহিত বাপ্পি লাহিড়ী

সে সময় দুই কিংবদন্তী মোহাম্মদ রফি ও কিশোর কুমারের মধ্যে ছিল কঠিন লড়াই। রফি ভালো, নাকি কিশোর- তা নিয়ে তুমুল তর্ক লেগেই থাকতো। ঠিক তখনই এক অসাধ্য সাধন করেন তরুণ বাপ্পি লাহিড়ী। ‘জখমি’ ছবির জন্য দুজনকে একসঙ্গে গান গাওয়ান তিনি, যা তৈরি করেছিল ইতিহাস।

পুরো ক্যারিয়ারে ৫০০টি ছবিতে পাঁচ হাজারের বেশি গানে সুর দিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ী। একদিনে সর্বাধিক গানের রেকর্ডিং করায় তার নাম উঠেছিল ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড’ রেকর্ডে।

তবে. শুধু সুরকার হিসেবে নয়, বাপ্পি লাহিড়ীর ফ্যাশন সেন্সও নজর কেড়েছিল সবার। সোনার গয়নার প্রতি ছিল তার আলাদা ভালোবাসা। নানারকম সোনার গয়না পরতে ভালবাসতেন। প্রত্যেক দিনই নতুন গয়না পরতেন। তার গলায় শোভা পেতো আটটি সোনার চেন, যা তিনি রোজ বদলে নিতেন।

বাপ্পি লাহিড়ীর গলায় থাকতো গণেশের একটি লকেট। সেই লকেট ছিল পান্নাখচিত। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসন তার এই লকেটের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।

মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে বাপ্পি লাহিড়ী

‘ডিস্কো ড্যান্সার‘ ছবির ‘জিমি জিমি’ গান কে না শুনেছেন! এই গানটি এতটাই হিট হয়েছিল যে হলিউডের ছবিতেও ব্যবহার করা হয়। হলিউডের ছবি ‘ইউ ডোন্ট মেস উইথ দ্য জোহানস’ ছবিতে শোনা যায় ‘জিমি জিমি’।

গায়ক, সুরকারের পাশাপাশি সমাজসেবাও করতেন তিনি। সেজন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জাস্টিস ফর উডোস বাপ্পি লাহিড়ীকে ‘হাউজ অব দ্য লর্ড’ সম্মান দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ী আর নেই

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।