ঢাকাই চলচ্চিত্রের আকাশে তিলোত্তমা নায়িকা হিসেবে সমাদৃত ছিলেন পারভীন সুলতানা দিতি। সদাহাস্যোজ্জ্বল এই চিত্রনায়িকার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী রোববার (২০ মার্চ)।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে দিতির। এরপর জীবদ্দশায় প্রায় ২শ’ সিনেমার করেছেন তিনি। উপহার দিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র।
এই কারণেই দিতি আজও রয়ে গেছেন দর্শক হৃদয়ে। মৃত্যুবার্ষিকীকে সামাজিকমাধ্যমে অসংখ্য ভক্তরা শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করছেন এই অভিনেত্রীকে।
আরফাত নামের একজন বাংলা চলচ্চিত্র নামের গ্রুপে দিতির একটি তরুণ বয়সের সাদাকালো ছবি শেয়ার করেছেন। সেখানে অভিনেত্রীকে স্মরণ করে তিনি লেখেন, ‘‘চলচ্চিত্রে অনেক শিল্পী আসবে, কিন্তু দিতি ম্যামের শূন্যতা বোধ হয় কোনোদিন পূর্ণ হবেনা। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে উনার জুটি দারুণ। দিতির গানের এক্সপ্রেশনগুলো অনেক ভালো। আসলেই ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন প্রিয় নায়িকা। ’’
ফাহিম মুনতাসির নামের একজন দিতির ছবি সংম্বলিত একটি ব্যানার শেয়ার করেছেন। সাদাকালো ব্যানারে এই অভিনেত্রীর নামের সঙ্গে জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ লেখা রয়েছে।
হৃদয় সাহা নামের একজন দিতির কোলাজ ছবি শেয়ার করে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। তার একটি অংশ এমন, ‘‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, তোমায় নিয়ে হাজার বছর বাঁচতে বড় ইচ্ছে হয়। ’ সত্যিই মানুষের জীবন অনেক ছোট, অকাল প্রয়াণে হারিয়ে যায় অনেক প্রাণ। নিজের সিনেমার এই গানের কথাগুলো যেন ফলে গিয়েছিল উনার বেলায়। জীবনের মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন পরপারে, আজ উনার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা দিতি। ’’
১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন দিতি। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। যদিও সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। এই অভিনেত্রীর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা আজমল হূদা মিঠু পরিচালিদ ‘আমিই ওস্তাদ’।
সুভাষ দত্ত পরিচালিত স্বামী স্ত্রী (১৯৮৭) সিনেমায় দিতি আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন। এই সিনেমায় অভিনয় করে প্রথমবারের মতো শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এই অভিনেত্রী।
দিতি অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- ‘সুদ আসল’, ‘উসিলা’, ‘ভাই বন্ধু’, ‘স্বর্গ নরক’, ‘চন্ডিদাস ও রজকিনী’, ‘হীরামতি’, ‘সাহস’, ‘বীরাঙ্গনা সখিনা’, ‘অমর সঙ্গী’, ‘স্ত্রীর পাওনা’, ‘সাজানো বাগান’, ‘লক্ষীর সংসার’, ‘প্রেমের প্রতিদান’, ‘লুটতরাজ’, ‘অচল পয়সা’, ‘চার সতীনের সংসার’, ‘মেঘের কোলো রোদ’, ‘আকাশ ছোয়া ভালোবাসা’, ‘সেখানে তুমি সেখানে আমি’।
ব্যক্তি জীবনে ১৯৮৬ সালে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে ভালোবেসে ঘর বাঁধেন তিনি। তাদের সংসারে রয়েছেন কন্যা লামিয়া চৌধুরী ও পুত্র সাফায়েত চৌধুরী দীপ্ত। সোহেলের মৃত্যুর পর ২০০১ সালে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন দিতি। তবে পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
এনএটি