জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আলিফ আলাউদ্দিন কয়েক বছর ধরেই পলিসিস্টিক কিডনি রোগে আক্রান্ত। তার দুটি কিডনির ৯০ ভাগ কার্যক্ষমতা হারিয়েছে।
বিষয়টি জানিয়েছেন, তার স্বামী আর্টসেল ব্যান্ডের গিটারিস্ট কাজী ফয়সাল আহমেদ।
জানা যায়, ১০ মার্চ চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতাল বাইরে বের হয়ে গাড়িতে ওঠার আগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আলিফ চোখে মারাত্মক আঘাত পান।
শনিবার (১৯ মার্চ) রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাজী ফয়সাল আহমেদ জানান, ‘ডায়ালাইসিস শেষ করে হাসপাতালের নিচেই গেটের সামনে অপেক্ষা করছিলাম ট্যাক্সির জন্য। আলিফ আমার পাশেই ছিল। হঠাৎ বিকট চিৎকার দিলো সে। আমি ঘুরে দেখলাম, আলিফ হাতের ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই মুহূর্তে খেয়াল করলাম, তার সামনের স্টিলের গ্রিলে সে মাথায় আঘাত পাবে। আমি আমার হাত দিয়ে সেটা ঠেকাতে পারলাম ঠিকই, কিন্তু ও পড়ে গেল রেলিংয়ের চিকন গ্রিলের ওপর। চোখ ও কপালে আঘাত পেলো। এরপর থেকে ওর সেন্স নেই। আমার সামনে পড়ে আছে আর কাঁপছে। চোখ উপরের দিকে, মুখ বাঁকা হয়ে আছে, হাতের কনুইতে ব্যথা পেয়েছে। তখন কিছুক্ষণের জন্য আমার মনে হয়েছিলো, তার জান বের হয়ে গেছে শরীর থেকে। হাসপাতালের গার্ড চিৎকার করে স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করে নিয়ে যায় ইমার্জেন্সিতে। ’
ফয়সাল আরও জানান, ‘সেন্স আসার পর সেই মুহূর্তে আলিফ কিছুই মনে করতে পারেনি কখন পড়েছে, কখন নিচে গেছে আমার সঙ্গে! ডায়ালাইসিসের সময় ব্লাড থিনার দেওয়া হয়। তার জন্য ব্যথা পাওয়া জায়গাগুলোতে রক্ত এসে ফুলে গেছে। তারপর আলিফের তিন দিন কেটেছে আইসিইউতে। সিটিস্ক্যান, এমআরআই, ইইজি, ইকো ও ইসিজি টেস্ট করানো হয়েছে। বর্তমানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখছেন। ইরোলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট ও নেফ্রোলজিস্ট- সবাই একটা করে রিপোর্ট চেক করছেন আর জানাচ্ছেন পরবর্তী পদক্ষেপ। ডাক্তারদের পরিপূর্ণ চেষ্টায় আলিফ এখন সেই অবস্থা থেকে অনেকটাই ভালো। তবে এখনও অনেক জটিলতা আছে। আগামী তিন মাস ওষুধ খেয়ে আবার সব টেস্ট করে ডাক্তারকে দেখাতে যেতে হবে। ’
শুক্রবার (১৮ মার্চ) ভারত থেকে ঢাকায় ফিরেছেন আলিফ। বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে রয়েছে তিনি। সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালাইসিস, দুটি করে ইঞ্জেকশন আর ওষুধ চলছে তার।
প্রসঙ্গত, প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী ও নজরুল সংগীতশিল্পী সালমা সুলতানার মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন। তার মা সালমা সুলতানাও একই রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
এনএটি