কলকাতা: সঙ্গীত দুনিয়ায় কেকে নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। বাংলা, হিন্দি, তামিল, কান্নাড়, মারাঠিসহ একাধিক ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি।
কলকাতায় দুই দিনের জন্য শো করতে এসেছিলেন কেকে। মঙ্গলবার (৩১ মে) গাইছিলেন গুরুদাস কলেজের ফেস্টে, নজরুল মঞ্চে। তখনই কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন। বিরতিতে ব্যাক স্টেজে বিশ্রামও নেন। বলেন, অনুষ্ঠানের আলো কমাতে।
অনুষ্ঠানের পর গাড়িতে ফেরার সময় ঘামছিলেন। চালককে জানান, শীত শীত করছে। কলকাতার গ্র্যান্ড হোটেলে ঢোকার সময় অনুরাগীদের দেখে ছবি তুলতে নিষেধ করেন। এরপর কক্ষে ঢুকেই মাটিতে পড়ে যান। গায়ককে সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তাদের প্রাথমিক অনুমান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই প্রয়াত শিল্পী।
কেকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গীতশিল্পী তথা বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়ো বলেন, একসঙ্গে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম। শেষ আড়াই মাস আগে কথা হয়েছিল। ও কোনোদিন রাজনীতি, গসিপ নিয়ে থাকত না। গান আর পরিবার নিয়ে থাকত। করোনার পর আমাদের জীবন অন্যরকম হয়ে গেছে।
খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। শোকপ্রকাশ করে তিনি জানান, কেকের পরিবার বুধবার সকালে কলকাতায় আসার কথা রয়েছে। তার মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে। তার প্রয়াণে শোকের ছায়া বাংলা সঙ্গীতজগতে। ভেঙে পড়েছেন মিউজিক কম্পোজার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারছি না। আমাদের বন্ধুত্ব ২৭ বছরের। এভাবে ছেড়ে চলে ভাবতে পারছি না।
সঙ্গীত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী, অনুপম রায়সহ অনেকে রাতেই শোকপ্রকাশ করেছেন। চোখের পানি মুছে অনুপম রায় বলেন, খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন কেকে। রাতেই হাসপাতালে পৌঁছান জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার কাছ থেকে দুঃসংবাদ শুনে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না সনু নিগম।
সাবেক ভূমি ব্যান্ড শিল্পী সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কিছুতেই মানতে পারছি না। শোকপ্রকাশ করে গায়িকা ইমন বলেন, একজন শিল্পী হিসেবে বিষয়টার সঙ্গে রিলেট করতে পারছি না। এত কম বয়সে চলে যাওয়া সত্যিই দুঃখের।
শোকপ্রকাশ করেছেন চন্দ্রবিন্দুর গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমি কেকের অসম্ভব ফ্যান। সামনেই একটা ছবির জন্য ওকে দিয়ে গান গাওয়াব ভেবেছিলাম। তা আর হয়ে উঠল না। বিশ্বাস হচ্ছে না, একটা মানুষ এভাবে চলে গেল শো করতে করতেই।
সুরকার বিক্রম ঘোষ বললেন, এটা ভাবনার বাইরে। এই কদিন আগে ওর সঙ্গে অনুষ্ঠান দেখে এলাম। এত কম বয়স। খুব কষ্ট হচ্ছে।
জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, কেকে নিয়মিত শরীর চর্চা করতেন। নজর থাকতো ডায়েটেও। নিজেকে কখনোই প্রচারের আলোতে আনতেন না। গান গাইতে গাইতে চলে গেলেন। একজন শিল্পীর এটাই বড় প্রাপ্তি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২২
ভিএস/এনএসআর