ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বৃষ্টিকে হার মানিয়ে জনস্রোতে ভাসলো কোক স্টুডিও কনসার্ট

নাজমুল আহসান তালুকদার, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১১ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
বৃষ্টিকে হার মানিয়ে জনস্রোতে ভাসলো কোক স্টুডিও কনসার্ট

তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ফিফা ট্রফির বাংলাদেশ ট্যুর এবং কোক স্টুডিও বাংলার কনসার্ট। বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।

কনসার্টে অংশ নেয় নগরবাউল জেমস, তাহসান, অর্ণব, সুনিধি নায়েক, পান্থ কানাই, অনিমেষ, ঋতুরাজ, নন্দিতা, বগা তালেব। এছাড়াও ব্যান্ডের মধ্যে ওয়ারফেজ, নেমেসিস, লালন, ইন্ট্রোয়েট ও জালালি সেট।  

কনসার্টের গেট খোলার নির্ধারিত সময় ছিল বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৩০ মিনিটে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আয়োজনটি দেরি করে শুরু করার কথা জানান আয়োজক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গ্রে ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাউসুল আলম শাওন। এক পর্যায়ে ঘোষণা আসে আয়োজনটি স্থগিত করার। কিন্তু আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে আসায় স্থগিত সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন আয়োজকরা। অবশেষে রাত ৯টা থেকে কনসার্ট শুরু করেন তারা।

সারাদিন বৃষ্টি থাকলেও কনসার্টে শুরুর আগেই জনস্রোতে পরিণত হয় আর্মি স্টেডিয়াম। রাত ৯টায় শুরু হওয়া এই কনসার্ট গভীর রাত পর্যন্ত উপভোগ করেন উপস্থিত দর্শকরা।  

মূল অনুষ্ঠান শুরুতেই শায়ান চৌধুরী অর্ণব ও সুনিধি নায়েক কোক স্টুডিও বাংলার সদস্যদের নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। এরপর তারা গাইতে শুরু করেন রবীন্দ্রসংগীত ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’। এরপরেই মঞ্চে আসেন পান্থ কানাই ও অনিমেষ রায়। তারা হাজং ও বাংলা ভাষার ফিউশনে তৈরি ‘নাসেক নাসেক’ ও পরিচিত লোকসংগীত ‘দোল দোল দুলুনি’ গান গেয়ে শুনিয়েছেন। তাদের সঙ্গে গানটির সংগীতায়োজন করা অদিত রহমানকেও মঞ্চে দেখা মেলে।

দুটি গানের ১৫ মিনিটের পরিবেশনায় আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদেরর মাঝে উন্মাদনার রেশ যেন বহুগুণে বেড়ে যায়। এরপরেই মঞ্চে ওঠেন ঋতুরাজ ও নন্দিতা। তারা গেয়ে শোনান কোক স্টুডিওর তৃতীয় গান ‘বুলবুলি’। তাদের পরেই বগা তালেবকে সঙ্গে নিয়ে অর্ণব পরিবেশন করেন ‘চিলতে রোদে’ ও ভাওয়াইয়া গান ‘ও কি একবার আসিয়া’। তাদের অসাধারণ মেলবন্ধনে গানটি শ্রোতারা গুণমুগ্ধ হয়েই শোনের।

এরপরেই ব্যান্ডতারকা মিজান রহমানকে নিয়ে মঞ্চে আসেন ফোক সম্রাজ্ঞী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। তার অনুরোধে সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপরেই কোক স্টুডিও থেকে প্রকাশিত ‘প্রার্থনা’ গান ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, ছায়া দে রে তুই’ গেয়ে শোনান মমতাজ। তার সঙ্গে মঞ্চে ফিউশন করা ‘বাবা মাওলানা’ অংশটুকু গেয়েছেন মিজান।  

এরপর গান শোনাতে একে এক মঞ্চে আসেন জনপ্রিয় ফোক ব্যান্ড লালন, নেমেসিস, তাহসান, ওয়ারফেজ, ইন্ট্রোয়েট ও জালালি সেট। এই কনসার্টের সবশেষ আকর্ষণ ছিল নগর বাউল জেমস।

জেমস এসেই যেন বৃষ্টি ভেজার দিনের পর সারা ঢাকা যখন নিরব, সেই রাতের সুরের ঝড় তুললেন। গাইতে শুরু করলেন ‘আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেবো’। গান শেষ হতেই চারপাশ থেকে ভক্তরা ‘গুরু’, ‘গুরু’ চিৎকার করতে শুরু করে। এরপরেই তিনি গাইলেন ‘দুষ্ট ছেলের দল ছন্নছাড়ার দল’। গানের দে দে তালি, দে তালি যখন গাইছিলেন তখন শুধু দুষ্ট ছেলের দলেরাই নয়, মেয়েরাও হাত তালির সঙ্গে নাচতে থাকেন আর কণ্ঠ মেলাতে থাকেন জেমসের সঙ্গে।  

সময়ের কারণে কনসার্টটি সংক্ষিপ্ত করা হয়। জেমস দর্শকদের উন্মাদনা ধরে রাখতে এবার গাইলেন ‘পাগলা হাওয়ার তরে’ গানটি। এতে স্টেডিয়ামে থাকা দর্শকদের উন্মাদনা আরো কয়েকগুণে বেড়ে যায়। এরপরেই নিজের শেষ পরিবেশনায় চলে যান জনপ্রিয় এই ব্যান্ড তারকা। সবশেষ তিনি গেয়ে শোনান বলিউডের ‘গ্যাংস্টার’ চলচ্চিত্রে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ গানটি। তার এই পরিবেশনার মধ্য দিয়েই শেষ হয় কোক স্টুডিও বাংলার কনসার্ট।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১১ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।