ঢাকা: দিন যতই যাচ্ছে, প্রযুক্তি ততই উন্নত হচ্ছে। এবার এই উন্নত প্রযুক্তির সুবাদে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরাও পৃথিবীর আলো দেখতে পাবেন।
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের এক অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রে ফ্লাইনের (৮০) চোখের চশমায় এক ধরনের ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে, যা ছোট একটি ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও চিত্র ডিভাইসটির মাধ্যমে চোখের রেটিনার কোষকে উদ্দীপ্ত করবে। এরপর এই সংকেত স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছাবে। তারপর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা পৃথিবীর আলো দেখতে পারবেন। আর এই ডিভাইসকে বলা হচ্ছে ‘বায়োনিক আই’।
এই ডিভাইস দিয়ে যুক্তরাজ্যের এক গবেষক-চিকিৎসক দল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পৃথিবী দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা চার ঘণ্টার অপারেশন শেষে রে ফ্লাইনের চোখে ‘বায়োনিক আই’ স্থাপনে সফল হয়েছেন। এই গবেষক-চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দেন চিকিৎসক পাউলো স্ট্যানগা।
তিনি ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের অধ্যাপক ও স্থানীয় রয়েল আই হসপিটালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ।
গবেষক দল জানান, ফ্লাইন বার্ধক্যজনিত কারণে চোখের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ছিলেন। চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় একে ‘এজ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’ বলে। যুক্তরাজ্যে তার মতো এমন চক্ষুরোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখেরও ওপরে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সীদের জন্য এটি একটি অতি সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে।
পাউলো স্ট্যানগা বলেন, ফ্লাইনের অগ্রগতি সত্যিই উল্লেখযোগ্য। তিনি খুব ভালো মতোই দৃষ্টিসীমার মধ্যে মানুষজনসহ অন্যান্য সব কিছুই দেখতে পাচ্ছেন।
ফ্লাইনের চশমার ডিভাইসটি গত জুন মাসে স্থাপন করার পর পহেলা জুলাই থেকে সক্রিয় হয়।
৮০ বছর বয়সী কোনো ব্যক্তির চোখে `বায়োনিক আই’ স্থাপনে এটাই প্রথম সাফল্য বলে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি দাবি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ফাউন্ডেশন ফাইটিং ব্লাইডনেস’র (এফএফবি) তথ্য মতে, ‘এজ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’র মতো চোখের রেটিনার অক্ষমতা বা ‘রেটিনাল ডিজেনারেটিভ ডিজেস’-এ বিশ্বের ৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত।
চোখের এসব রোগ ছাড়াও যে কোনো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বা আংশিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রযুক্তিভিত্তিক এ চিকিৎসা নিয়ে পৃথিবীকে নতুনভাবে দেখার সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক ব্যক্তি এই ‘বায়োনিক আই’ ব্যবহার করে নতুনভাবে পৃথিবীকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন।
প্রযুক্তির এমন ব্যবহারের মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসায় নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন গবেষকেরা।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
টিআই