‘‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে
তুমি জানো না, আমি তোমারে পেয়েছি অজানা সাধনে’’
--রবীন্দ্রনাথের এই গানটিই যেন সত্য হলো সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে অনেক দূরের এক দেশে। এক গভীর প্রেমের চিরায়ত আখ্যানের জন্ম দিয়েছেন পশ্চিমা দেশের দুই নরনারী।
হাওয়ার্ডের বয়স ৯২ আর লরার ৯৩। তারা দু’জন স্বামী-স্ত্রী। নিরবচ্ছিন্ন দাম্পত্য সুখের ভেতর দিয়ে কেটেছে তাদের ৭৩ বছরের দীর্ঘ বিবাহিত জীবন।
দুজনেই খুব সঙ্গীতপ্রিয়। দু’জনার গানের গলাও বেশ চমৎকার। তারা একে অপরের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইতেন, মুখে মুখে চরণ রচনা করতেন।
একটা গান খুবই প্রিয় ছিল তাদের- রোজমেরি ক্লুনির (Rosemary Clooney) `ইউ উইল নেভার নো ("You'll Never Know")। পারিবারিক কোনো উৎসবে-অনুষ্ঠানে তারা এ গানটা গাইতেনই।
লরা এখন মৃত্যুশয্যায়। হাওয়ার্ডও চলাফেরার সব ক্ষমতা হারিয়ে এখন হুইলচেয়ারবন্দি।
লরা মুমূর্ষু বলে গান গাইবার কোনো ক্ষমতা আর নেই তার। দিনকয় আগে হাওয়ার্ড লরাকে দেখতে যান হাসপাতালে।
লরা যখন দেখলেন হুইল চেয়ারে চেপে হাওয়ার্ড তাকে দেখতে হাসপাতাল পর্যন্ত চলে এসেছেন, তখন তার আর আনন্দ ধরে না।
লরা তার প্রেমিক স্বামীর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলেন নির্নিমেষে। এরপর খুব অস্পষ্ট গলায় আব্দার জানালেন হাওয়ার্ড যেন তাকে সেই গানটি একটিবার গেয়ে শোনান।
হাওয়ার্ডেরও গলায় এখন গান গাইবার মতো শক্তি অবশিষ্ট নেই। তবু প্রেমের টানে প্রবল ইচ্ছার জোরে তিনি শুরু করলেন সেই গান, প্রথম থেকে শেষ অব্দি, ইউ উইল নেভার নো ("You'll Never Know")।
আর এই স্বর্গীয় মুহূর্তটি পুরোটাই রেকর্ড করেছেন তাদের নাতি এরিন সোলারি (Erin Solari)। তিনি পরে এটি ইউটিউবেও ছেড়েছেন।
এরিন আরও জানালেন, তার দাদা হাওয়ার্ড যেদিন স্ত্রী লরাকে রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিতে যান, সেদিনও তাকে প্রবোধ দিতে গেয়েছিলেন এই গান। জয়তু প্রেমের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৫
জেএম/