প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য। বিস্তার, স্থায়িত্ব আর প্রতিপত্তির দিক থেকে রোমান সাম্রাজ্যের সাথে আর কোনো প্রাচীন সাম্রাজ্যের তুলনা চলে না।
ওই দুর্গে থাকতো প্রায় ৫০০ সৈন্য। সেখানে পাওয়া গেছে রোমান সেনাদের ব্যবহৃত বহু রকমের জিনিসপত্র। দুর্গটি ছেড়ে যাওয়ার আগে রোমানরা এটি নিজেরাই ধ্বংস করে যায়। গুঁড়িয়ে দিয়ে যায় নিজেদের পরিত্যক্ত সব সরঞ্জাম। দুর্গের পাশেই বিরাট আকারের গর্ত করে সব জিনিসপত্র সেই গর্তে ফেলে যায় তারা। গুরুত্বপূর্ণ এই খননকাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন গ্যোয়টে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টমাস মাউয়ার।
অধ্যাপক মাউয়ারের ধারণা, রাইন নদীর পূর্ব দিকের এলাকাগুলোতে অভিযান পরিচালনার সুবিধার্থেই রোমানরা এখানে এসে দুর্গটা গড়ে তোলে।
ঊনবিংশ শতক থেকেই প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করে আসছিলেন গার্নশাইমের মাটির নিচে নিশ্চয় বড়সড় আকারের কোনো রোমান স্থাপনা খুঁজে পাওয়া যাবে। কেননা তখেও বেশ কিছু রোমান নিদর্শন মিলেছিল। সাম্প্রতিক খননকার্জে ওই ধারণাই সত্য হলো। এবার মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল দুর্গ, ভবনের ধ্বংসাবশেষ, এখানে-ওখানে ছড়ানো ভাঙা ইটের টুকরো, সুরক্ষিত সুরঙ্গপথ ছাড়াও অনেক কিছু। ভাঙ্গা ইটের গায়ে নাম, নম্বর, সেনাদলের পরিচয় লেখা ছিল। রোমান সেনাদলের এই ইউনিটটির নাম ছিল সৌভাগ্যের দেবী ফরচুনা প্রিমিগেনিয়ার নামে। ইটের টুকরোর গায়ে তাই ‘Legio XXII Primigenia Pia Fidelis’—এই কথাগুলো লেখা।
টমাস মাউয়ার ও তার ছাত্রছাত্রীরা সেখানে দুর্গ ভবনের কাঠামোর ধ্বংসাবশেষের পাশাপাশি আরও যেসব বস্তু খুঁজে পেয়েছেন সেসবের মধ্যে আছে দুটো ইটের তৈরি কুয়া, সেলার পিট ও ফায়ার পিট বা চুল্লি, সিরামিকের বাসন কোসন, পানপাত্র, দরজার খিল বা হুড়কো, মুক্তোর অলঙ্কার, কাপড় চোপড়ের অবশেষ, হাড়ের তৈরি চুলের কাঁটা এবং কুকুরের কঙ্কাল।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৫
জেএম