ঢাকা: মানুষের মন আর মস্তিষ্কের সম্পর্কটা ভীষণ অদ্ভুত। যেকোনো কাজ করার ক্ষেত্রেই এ দুটোর সমন্বয় প্রয়োজন।
মস্তিষ্ক অনেকটা অভিভাবকের মতো, তবে মনের বিরুদ্ধে কাজ করলে আমরা বরাবরই কষ্ট পাই। মন চায় অপার স্বধীনতা আর মস্তিষ্ক সমসময় চায় মনকে নিয়মের ছকে বেঁধে রাখতে।
অকওয়ার্ড ইয়েতি ওয়েবকমিকের আর্টিস্ট ও কার্টুনিস্ট নিক সেলুক মন ও মস্তিষ্কের এমন দ্বন্দ্ব নিয়ে তৈরি করেছেন একটি মজার কমিক সিরিজ। আগামী ২০ অক্টোবরে নিকের এই কমিক সিরিজটি বই আকারে ছাপা হবে। বইটি অ্যামাজনডটকম থেকে সহজেই কিনতে পারবেন। কিন্তু তার আগেই যদি অনাগত বইটির কয়েকটি কার্টুন সিরিজ দেখে নেওয়া যায় তবে কেমন হয়! চলুন দেখে নিই-
অফিস বা কর্মস্থলে তো কাজের চাপ থাকবেই। কিন্তু একটানা কাজ করতে কারই বা মন চায়। কিন্তু মস্তিষ্ক তো জানে কাজে ফাঁকি দেওয়া যাবে না বা সময় নষ্ট করা ঠিক না। মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই বা কখনও লড়াই করেই মস্তিষ্ককে কাজ করতে হয়।
জীবনের গতিপথ ঠিক কোনদিকে আর গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে কোন পথে এগোতে হবে মস্তিষ্ক সবসময়ই তা বুঝতে পারে। দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সে সর্বদাই সজাগ। কিন্তু মন যে চায় হেসে খেলে আর আনন্দেই জীবন পাড়ি দিতে।
একটা কথা স্বীকার করতেই হবে, মন বা হৃদয় বরাবরই বেশি সংবেদনশীল। দুঃসংবাদ বা হতাহতের খবর শুনে বা দেখে ভেতরে ভেতরে সে নিজেই বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে।
এবার আসি সাম্প্রতিক প্রসঙ্গে। ফেসবুকে কোনো উত্তেজক স্ট্যাটাস দেওয়ার পরই মনের লাফালাফি শুরু হয়ে যায়। কেউ কমেন্ট করলো কিনা বা লাইক দিলো কিনা। ঘুরে ফিরে বারবারই সেই স্ট্যাটাসে ফিরে আসতে চায় মন। কিন্তু মস্তিষ্ক তাকে শান্ত করতে চেষ্টা করে। বুঝেশুনে সবার মতামত দেখে উপযুক্ত উত্তর দেওয়াটাই মস্তিষ্কের কাছে উত্তম।
মন সবসময়ই তরুণ আর উদ্যমী। এমনটা তো প্রায় সবারই হয়- কোথাও যাওয়া বা কিছু করার প্রসঙ্গ এলে মন তড়িঘড়ি করে প্রস্তুত হলেও মস্তিষ্ক কাজের ব্যস্ততা, বিশ্রাম আর উচিত অনুচিত ভেবে তা নাকচ করে দেয়।
হাতে যখন বাড়তি টাকা আসে তখন সবার মস্তিষ্কই তা সঞ্চয়ের কথা ভাবে। কিন্তু মন তখনই শুরু করে খোঁচাখুঁচি। সে চায় আমোদ-আল্হাদে মেতে উঠতে।
মনের ইচ্ছে আর জিভের স্বাদ যদি একজোট হয় তবে মস্তিষ্কের আর কি করা!
মনের সংকল্প হুটহাট পাল্টে যায়। আজ এটা চাই তো কাল ওটা। কিন্তু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পাকাপোক্ত করতে হলে মন আর মস্তিষ্ককে এক হতে হয়। তবে ধৈর্য আর বাস্তবতা বোঝার ক্ষেত্রে মনটা যে মস্তিষ্কের তুলনায় বড়ই আনাড়ি।
ছবি: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
এসএমএন/এএ