বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের মুখে রয়েছে নির্বাচন কমিশন। বাফুফের এবারের নির্বচন কমিশনের প্রধান মেজবাহ উদ্দিন।
আজ ছিল বাফুফের মনোনয়ন বাছাইয়ের দিন। আজই একাধিক পদে নমিনেশন নেওয়া প্রার্থীদের যে কোনো এক পদ থেকে নাম প্রত্যাহার করতে বলা হয় নির্বাচন কমিশন থেকে। এবারের নির্বাচনে সাবেক জাতীয় ফুটবলার ইকবাল হোসেন (সহ-সভাপতি ও সদস্য) ও তৃতীয় বিভাগের ক্লাব এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউন্সিলর শাহাদাত হোসেন জুবায়ের দুই (সভাপতি ও সদস্য) পদে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। আজই এই দুজনকে একটি পদে নির্বাচন করার জন্য নির্দেশনা প্রেরণ করে নির্বাচন কমিশন। দুই জনই সভাপতি এবং সহ সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
২১ পদে ৫২ টি মনোনয়ন জমা পরেছিল। সেখান থেকে দুইজন নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে ৫০ টি মনোনয়নকে বৈধতা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আজ মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ছিল। মোট ৫২ টি আবেদনপত্রের মধ্যে দুইটা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন মোট প্রার্থী হচ্ছে ৫০ জন। এই ৫০ জনের আবেদনকে কমিশন বৈধ ঘোষণা করেছে। ’
ক্রীড়াঙ্গনে অন্য সকল ফেডারেশনের (ক্রিকেট বোর্ডে প্রথম স্তরের নির্বাচনে সবাই পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে) নির্বাচনে অনেক প্রার্থী একাধিক পদে মনোনয়ন ক্রয় এবং দাখিল করে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যাচাই-বাছাই শেষে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় একাধিক পদেই একই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করে। প্রত্যাহারের সময় প্রার্থীরা সুনির্দিষ্ট একটি পদেই প্রার্থীতা ধরে রাখে।
২০১৬ সালে বাফুফেতে মেজবাহ উদ্দিনের নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সাবেক তারকা ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল প্রত্যাহারের দিন সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সদস্য দুই পদ থেকেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন। এবার যাচাই-বাছাইয়ের সময় এক পদে কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পাশ থেকে নির্বাচন কমিশনার এহসানুর রহমান বলেন, ‘বাফুফের নির্বাচন বিধিমালায় ৬ এর ৩ ধারায় একটি পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা বলা হয়েছে। ’
যাচাই-বাছাইয়ে একাধিক পদে বৈধ হওয়ার পর প্রত্যাহারের সময় একাধিক পদ থেকে প্রত্যাহার করে নিলেই এক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ থাকছে। সেই যুক্তির পাশাপাশি আরেকটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, ‘এক পদেই যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিধান থাকে তাহলে একাধিক পদে মনোনয়ন বিক্রি কেন এবং মনোনয়ন গ্রহণ কেন?’ এর বিপরীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উত্তর, ‘একজন দশটিও কিনতে ও জমা দিতে পারে। বৈধ হবে একটিই। ’
এদিন আলোচনায় ছিল আরও একটি বিষয়। মাহফুজা আক্তার কিরনের সদস্য পদে মনোনয়ন বাতিলের আবেদন করেন শরীয়তপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ডেলিগেট মোজাম্মেল হক চঞ্চল। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায় মনোনয়ন পত্রে বর্তমান নারী উইংয়ের প্রধান তার নাম লিখেছেন ‘মাহফুা আক্তার কিরন’। কিন্তু তার জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট অনুযায়ী নাম ‘মাহফুজা আক্তার’।
মনোনয়ন বাতিলের জন্য এটি সুস্পষ্ট প্রমাণ বলে দাবি তোলেন চঞ্চল। অথচ তার দাবিকে অবৈধ আর মাহফুজা আক্তারের মনোনয়নকে বৈধতা দিয়েছে কমিশন। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের কথা শুনেছি। আগের রেকর্ড দেখে এবং ফুটবল ফেডারেশনে নামের ধারাবাহিকতা দেখে, আমরা ওনার (মোজাম্মেল হক চঞ্চল) আবেদনটাকে আমরা গ্রহণযোগ্য নয় এবং প্রার্থীর (মাহফুজা আক্তার) মনোনয়নকে বৈধ বলে ঘোষণা করছি। ’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, ১৯ ও ২০ অক্টোবর প্রত্যাহারের শেষ সময়, প্রত্যাহারের সময় একটা পদের মনোনয়ন সরিয়ে নিলেই তো পারত, এখন কেন তাদের প্রত্যাহারের জন্য বলা হলো? উত্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিয়ে দেখিয়েছেন নির্বাচনী বিধিমালা।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
এআর/আরইউ