ঢাকা: ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে অনুমোদনবিহীন ঔষধের দোকান। এসব দোকান থেকে প্রেসক্রিপশনবিহীন ঔষধ বিক্রির কারণে ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে অনেক সাধারণ মানুষকে।
দেশে প্রায় ৯৭ ভাগ ঔষধই অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি হচ্ছে। ১৫০টি স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই ৯৭ ভাগ ঔষধ নিজেরা তৈরি করছে এবং অধিকাংশ ঔষধই আন্তর্জাতিক মানসম্মত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ৮৬টি দেশে এই ঔষধ রপ্তানি হচ্ছে। এমনকি উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন ইন্সুলিন ইনহেলার তৈরি হচ্ছে এবং ভ্যাকসিন তৈরিরও পরিকল্পনা চলছে।
তবে দেশে অনুমোদনবিহীন ঔষধের দোকান গড়ে ওঠার হার এবং সেসব থেকে প্রেসক্রিপশনবিহীন ঔষধ বিক্রির হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।
কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় একটি জরিপ চালানো হয়। জরিপে দেখা যায়, দেশে প্রায় দুই লক্ষ ১৫ হাজার ঔষধ দোকানের মধ্যে অনুমোদন আছে মাত্র ৮২ হাজারটির। ফার্মেসি কাউন্সিল থেকে দেওয়া একটি অনুমোদন কয়েকবার ব্যবহৃত হচ্ছে। এক্ষেত্রে এই ৮২ হাজার দোকানের মধ্যেও গোলমাল থাকতে পারে। প্রায় এক লাখ ৩৩ হাজার দোকানের কোন অনুমোদন নেই। দেশের আইন-কানুনের ক্ষেত্রে এটা বড় ধরনের একটি গ্যাপ।
তাই বলে বসে থাকলে চলবে না। আইন লঙ্ঘনকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে প্রেসক্রিপশন ছাড়া যাতে কোনো ঔষধ বিক্রি না করা হয় এবং ঔষধ বিক্রি সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির ওপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অবশ্য, সম্প্রতি এসব ব্যাপারে সরকারের যথেষ্ট তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঔষধ প্রশাসন (ড্রাগ এ্যাডমিনেস্ট্রেশন) ও ফার্মেসি কাউন্সিল সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে, ফার্মেসি এবং ফার্মাসিস্টদের অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। নয়তো প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ বিক্রি বেড়ে চলবে এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব বাড়তে থাকবে।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ বিক্রির উপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সঙ্গে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে, ৮৭% ঔষধ বিক্রি হয় প্রেসক্রিপশন ছাড়া। এটি উদ্বেগজনক ব্যাপার। এভাবে প্রেসক্রিপশনবিহীন ঔষধ বিক্রির প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়া উচিৎ।
তবে এ জন্য শুধু সরকার কিংবা প্রশাসনের দিকে চেয়ে থাকলে চলবে না, গণমাধ্যম এবং জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৩
অনুলিখন: মো. আজিবুর রাহমান রাজিব/এইচএ/আরআইএস