ঢাকা: ওষুধ কোম্পানি থেকে নগদ বা চেকের মাধ্যমে অর্থ নিচ্ছেন চিকিৎসক এবং ওষুধ বিক্রেতা ড্রাগিস্টরা। ঘুষ গ্রহণের বিনিময়ে নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রাইব ও বিক্রি করছেন তারা।
বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি থেকে এ রকম অর্থ গ্রহণকারী চিকিৎসক ও ড্রাগিস্টদের যে তালিকা বাংলানিউজের হাতে এসেছে তার দ্বিতীয় অংশটি প্রকাশ করা হলো।
ওষুধ কোম্পানি থেকে অবৈধ অর্থগ্রহণকারীদের এ তালিকায় এবার রয়েছে রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী ও পঞ্চগড়ের চিকিৎসক ও ড্রাগিস্টদের নাম।
গত আগস্ট মাসের এ তালিকায় ডাক্তার ছাড়াও কোয়াক, পল্লী চিকিৎসক এবং ড্রাগিস্টদের ডাক্তার বলে উল্লেখ করেছে ওই কোম্পানি। তবে বাংলানিউজ সকলের নামের পূর্বে ‘ডা.’ পদবী ব্যবহার করেনি।
উত্তরবঙ্গের এসব চিকিৎসকরা হলেন রংপুরের ধাপ জেল রোডের রোজ হাসপাতালের ডা. ফরিদা খানম রোজি, তিস্তা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডা. রেজাউল আলম।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মনোয়ারা বেগমের নাম তালিকাতে থাকলেও অর্থের লেনদেন হয়নি।
তালিকাতে আরো রয়েছে, লালমনিরহাটের থানা রোডের বাটা মোড়ের ন্যাশনাল সাপ্লাইয়ারস এর মোহরাব হোসাইন, ভাটিবাড়ির আজিজুর রহমান, ওয়াপদা বাজারের আশরাফুল ইসলাম। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সুমি ফার্মেসির ননী গোপাল।
কালিগঞ্জের ইয়াসমিন ফার্মেসির লুৎফর রহমান এবং পীরগাছার সিয়াম ফার্মেসির আব্দুল জলিলের নাম থাকলেও অর্থ লেনদেন হয়নি।
কান্দি বাজার এর যতীন্দ্রনাথ বর্মন, পীরগাছার তাম্বুলপুর বাজারের মিলন চন্দ্র বর্মন, জয় মেডিকেল হল এর রবীন্দ্রনাথ সরকার, আলহাজ ফার্মেসির অখিল কুমার, শিমুলতলী বাজারের নিরঞ্জন কুমারের নাম রয়েছে।
আগস্ট মাসের ওই তালিকায় নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনার এহসানুল হক, পাগলাপীর বাজারের এম এ সালাম,পানবাজারের নাফিউল ইসলাম, আলমনগর এর আশা ফার্মেসির হারুন অর রশিদ, মহীগঞ্জের নন্দীগঞ্জ বাজারের কাজল ফার্মেসির কাজল চন্দ্র রায়, তারাগঞ্জের একরচালির রানা ফার্মেসির অনিল কুমার রায়ের নাম রয়েছে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানার পাটগ্রাম ফেডারেশন এর শ্যামল চন্দ্র বর্মন, ডক্টর হাউস এর ডা. আঞ্জুমান আরা পুতুল, চশমা ঘরের আবু সাঈদ মন্ডল, কাউয়ামারি বাজারের হাই স্কুল রোডের সুরাইয়া ফার্মেসির মকবুল হোসেন, বাউরা বাজারের বিপুল সরকার, পাটগ্রাম বাজারের নজরুল ইসলাম অর্থ গ্রহণ করেছেন ওই কোম্পানি থেকে।
লালমনিরহাটের দহগ্রাম থানা হেলথ কমপ্লেক্সের ডা. জিল্লুর রহমানের নাম ওই তালিকাতে থাকলেও আর্থিক লেনদেন হয়নি।
অর্থগ্রহণকারীদের তালিকায় রয়েছেন, নীলফামারীর জলডাকা’র কাঠালি এলাকার বিন্নাবাড়ি বাজারের নূর আলম মিঞা, ডিমলা এলাকার চাপানি হাটের সোনাখুলি’র আব্দুল মতিন। হাফিজিয়া ফার্মেসির আসাদুজ্জামান আসাদ, খালেক ফার্মেসির আব্দুল খালেক এবং জলঢাকার আলিম ফার্মেসির অনিল চন্দ্র রায়ের নাম থাকলেও কোন ধরনের লেনদেন হয়নি।
জলঢাকার রোকেয়া ফার্মেসির রোকনুজ্জামান রোকো, জলঢাকা থানা হেলথ কমপ্লেক্সের ডা. ইমরান আহমেদ। চাপানি বাজারের সলিমুর রহমান, রাজারহাটের হাসানুর রহমান, গাবরোল বাজারের মোজাম্মেল হক অর্থ নিয়েছেন ওই কোম্পানি থেকে।
রংপুরের কাউনিয়া’র হারাগাছার খান হাউসের মাসুদুর রহমান, খানসামা হাটের মো. আলাউদ্দিন, মেনাজ বাজার সানাই মার্কেটের নূরে আলম জিকু, রিয়াল ফার্মেসির গোলাম মাওলা তালুকদারের নাম থাকলেও আর্থিক লেনদেন হয়নি।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার বাদশা মেডিকেল স্টোরের আব্দুর রউফ, পাড়ারহাটের গুলজার ফার্মেসির মোতালেব হোসেন, বারোভিটা বাজারের লেমন ফার্মেসি, কিশোরগঞ্জ থানা হেলথ কমপ্লেক্সের ডা. মো. নাসির উদ্দিন উক্ত কোম্পানি থেকে অসৎ অর্থ গ্রহণ করেছেন।
দিনাজপুরের পাকেরহাট থানার বাজার রোডের ডক্টর চেম্বারের ডা. মো. শামস উদ্দিন, হাবিব ফার্মেসির এটিএম আশরাফুল আলম, খানসামা এলাকার হসপিটাল গেট এর মা ফার্মেসির আফতাবুজ্জামান এবং চিড়ির বন্দর বাজারের ফাতেমা ফার্মেসির ভক্কা কুমার পালও নিয়েছেন কোম্পানির অবৈধ অর্থ।
একই থানার রোগমুক্তি চিকিৎসালয়ের ডা. বুলু সরকার এবং রহমত ফার্মেসির মোকসেদ হোসেনের নাম কোম্পানির তালিকাতে থাকলেও আর্থিক লেনদেন হয়নি।
নীলফামারীর ভবানীগঞ্জ বাজারের আজিজুল ইসলাম, পঞ্চপুকুর বাজারের তাজ ফার্মেসির তাজেদুল ইসলাম তাজ। এছাড়া ভবানীগঞ্জ বাজারের সুশান্ত রায়ের নাম থাকলেও আর্থিক লেনদেন হয়নি।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের ডা. এম এস জামান, নতুন বাজারের কবির ফার্মেসির ডা. মো. ইদ্রিস আলী, থানা হেলথ সেন্টার কোয়ার্টারের ডা. বসু দেব মন্ডল, ইসলামিক ক্লিনিক এর হারুন উর রশিদের নাম রয়েছেন এ তালিকায়।
এ তালিকায় আরো রয়েছেন, পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ হাসপাতালের ডা. মো. একরামুল হক, সু নাহার হাট এর চন্দন ফার্মেসির গোপেশ্বর রায়, কালিগঞ্জ বাজারের মমতা ফার্মেসির দ্বিজেন্দ্রনাথ রায়, লক্ষ্মীর হাটের ফজলুর রহমান, দেবিগঞ্জ বাজারের রহিমুল ইসলাম।
আরেকটি ওষুধ কোম্পানির অর্থ দেয়ার যে তালিকা বাংলানিউজের হাতে এসেছে সেখানে নীলফামারীর সৈয়দপুরের মরিয়ম আই হসপিটালের মেডিকেল অফিসার ডা. গোপাল চন্দ্র, দিনাজপুরের বিএনএসবি চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আনসার আলী, কুড়িগ্রামের উলিপুরের মরিয়ম আই হসপিটালের ডা. মিজানুর রহমান এবং ডা. দুলাল চন্দ্র বর্মনের নাম রয়েছে। এই চক্ষু বিশেষজ্ঞরা ওই ওষুধ কোম্পানি থেকে অর্থ নিয়েছেন এমন তথ্য বাংলানিউজের কাছে রয়েছে।
বি.দ্র. বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হবে অনৈতিকভাবে অর্থগ্রহণকারী চিকিৎসক ও ফার্মাসিস্টদের নাম। আপনি বা আপনার চারপাশে চিকিৎসা সেবা পেতে হয়রানির শিকার হওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে জানাতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়। অথবা ফোন করুন ০১৬৭৪১৭৪০৭০ এই নাম্বারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৩/আপডেট ১১১০ ঘণ্টা
এমএন/আরআই/আরআইএস/জেএম