ঢাকা: পূজা এবং ঈদ উপলক্ষে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছুটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। তবে উৎসবের এ ছুটি মানে না হঠাৎ দুর্ঘটনা বা অসুস্থ হয়ে পড়া।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার বাংলানিউজকে বলেন, পূজা ও ঈদের ছুটিতে যেন স্বাস্থ্য সেবা দিতে কোন ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য আগে থেকেই বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পূজা ও ঈদ মিলিয়ে সোমবার থেকেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪দিন সরকারি ছুটি। এরপরে রয়েছে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে এ ৬ দিনে হাসপাতালে যেন চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক থাকে সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা।
তিনি বলেন, ছুটির দিনগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা দিতে বেশ কিছু সভা করেছি আমরা। গত সপ্তাহে ডিপার্টমেন্ট প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। এরপর চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। গত শনিবার বিকেলে সিস্টার ইনচার্জকে নিয়ে বসেছি। রোববার বিকেলে বৈঠক হয় ওয়ার্ড মাস্টার এবং বয়দের সঙ্গে। ছুটির দিনগুলোতে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করতে, সকল বিভাগের করণীয় সর্ম্পকে আলোচনা হয়। এ সময় যারা দায়িত্ব পালন করবে, তাদের শিফট ও রোস্টার এরইমধ্যে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঈদে সাধারণত প্রফেসররা বাড়ি যান না। তাদের সাপোর্ট থাকবে এ সময়। সকাল, দুপুর, ইভিনিং এবং নাইটে তারা শিডিউল অনুযায়ী রাউন্ড দেবেন। বন্ধের দিনগুলোতে এমার্জেন্সি ক্যাজুয়ালিটিতে ১০ জন করে শিফট ডিউটি করবেন।
তিনি জানান, ঈদের বন্ধেও সব ধরনের চিকিৎসা সেবার সাপোর্ট দেবে ঢামেক হাসপাতাল। ওষুধের প্রয়োজনীয় মজুদ রাখা হয়েছে। ওষুধের স্টক এমনভাবে করা হয়েছে যেন ১৮ তারিখ পর্যন্ত কোন ওষুধের অভাব না হয়। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানে সকল লজিস্টিকস থাকবে। প্যাথলজি বিভাগ খোলা থাকবে। ব্লাড ব্যাংক খোলা থাকবে। জরুরি বিভাগ এক মুহূর্তের জন্যে বন্ধ হবে না বলেও জানান তিনি।
ঈদ উপলক্ষে শুধু মঙ্গলবার ও বুধবার হাসপাতালের আউটডোর সেবা প্রদান বন্ধ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এসময় গাইনি, নিউরোলজি ও অর্থোপেডিক’র মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর আউটডোর সেবাও চালু থাকবে। যেসব বিভাগ বন্ধ থাকবে সেগুলো কোনভাবেই টানা ৪৮ ঘণ্টার অধিক হবে না। ঈদের পরেরদিন বৃহস্পতিবারই আউটডোরের সবগুলো বিভাগ থেকে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, বিভাগীয় প্রধানরা যে রোস্টার করেছে সেখানে দায়িত্বরতদের কন্ট্রাক্ট নম্বর, ঐ শিফটে ফোকাল পারসনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিচালক জানান, কোরবানির ঈদের দিন মৌসুমী কসাইরা মাংস কাটতে অসাবধানতায় চাপাতি বা ছুরি চালায়। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে হাতে স্টেপস(কাটা এবং জখম) পড়ে। এ ধরনের প্রচুর আহত রোগী এদিন জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে। এসব আহতদের লক্ষ্য রেখে ইমার্জেন্সি স্টোরের পরিধি বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ঈদের ছুটি উপলক্ষে হাসপাতালও ফাঁকা হতে শুরু করেছে।
বছরের অন্যসময়গুলোতে এ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা থাকে ৪ থেকে ৫ হাজার। নিবন্ধন অনুযায়ী সোমবার দুপুরে এ সংখ্যা কমে এসেছে ১হাজার ২৯৭ জনে। সোমবার সব বিভাগ মিলে রোগী দেখা হয়েছে মাত্র ২২৫ জন। অথচ অন্যসময়ে এ সংখ্যা থাকে ৩ থেকে ৪ হাজার।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রোগীদের সংখ্যা আরো কমে যাবে। গত ঈদের দিন রোগী ছিল ৭’শ থেকে ৮’শ এর মতো।
ঈদে রোগীদের জন্য মজাদার খাবারের ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের দিন সকালে বেশ উন্নত ধরনের নাস্তা দেয়া হবে। সেখানে রুটি, ডিম এর সঙ্গে ফিন্নি দেয়া হবে। এরপর দুপুরের খাবারে থাকবে পোলাও, রোস্ট, কাবাব এবং কোমল পানীয়। সন্ধ্যায় দেয়া হবে মাংসের চাপ। রাতে খাবারের মেন্যুতে ভাতের সঙ্গে সবজির পাশাপাশি দেয়া হবে রুই মাছ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা; অক্টোবর ১৫, ২০১৩
এমএন/এনএস/আরআইএস