ঢাকা: বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা নিরাময়ে ব্যাপক কার্যক্রম চালানো হলেও গেল বছর এ রোগে ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এইচআইভির পর বিশ্বে কোনো সংক্রমণ জাতীয় রোগে মৃত্যুর এ সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বলে উল্লেখ করেছে ডব্লিউএইচও।
ডব্লিউএইচও প্রকাশিত বার্ষিক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে যক্ষ্মায় মৃত্যুর সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় যদিও এক লাখ কম, তবুও মৃত্যুর এ সংখ্যা উদ্বেগের বিষয়।
২০১২ সালে বিশ্বে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৬ লাখ, যা ২০১১ সালে আক্রান্তের তুলনায় একলাখ কম। আর ১৯৯০ সালের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
এ বিষয়ে ডব্লিউএইচও’র প্রধান মারিও রাভিগ্লিওন এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মার যথাযথ চিকিৎসার অভাবই মৃত্যুর কারণ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বে অনেক যক্ষ্মা রোগী আছেন যাদের কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়না। এমনকি তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেওয়া হয়না, চিকিৎসা তো দূরের বিষয়।
ডব্লিইএইচও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বে যক্ষ্মা রোগীর এক-তৃতীয়াংশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার। এ সংখ্যা আফ্রিকার চেয়ে এক চতুর্থাংশ ও পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের চেয়ে এক-পঞ্চমাংশের বেশি।
আক্রান্তের এ সংখ্যা শুধু ভারতেই ২৬ শতাংশ, আর চীনে এ হার ১২ শতাংশ।
১৯৯৫ সালে ডব্লিউএইচও ভয়াবহ সংক্রামক এ রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার করে। সে সময় আক্রান্ত পাঁচ কোটি ৬০ লাখ রোগীর মধ্যে দুই কোটি ২০ লাখ রোগীকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়।
তবে যক্ষ্মা নিরাময়ে বর্তমানে যে প্রতিষেধক ব্যবহার করা হয় তা খুব বেশি কার্যকরী নয় বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। আর ২০২৫ সালের পূর্বে এ রোগের শক্ত কোনো প্রতিষেধক বাজারে আসবে না বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে জানানো হয়।
বিশ্বব্যাপী এ রোগ নিরাময়ে পর্যাপ্ত তহবিলের প্রতিও জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাদের মতে প্রতি বছর এর প্রতিষেধকের জন্য প্রায় ২০০ কোটি ডলার ঘাটতি থাকছে।
দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এ রোগ নিরাময়ে প্রতিবছর ৮০০ কোটি ডলারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৩
জেডএস/এসএফআই/জিসিপি