গত তিনদিনে সিরাজগঞ্জ ২৫০-শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে আউটডোর ও ইনডোরে বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় আশানুরূপ চিকিৎসাসেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
রোববার (৪ আগস্ট) সিরাজগঞ্জ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্যা রোগী বারান্দার মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেড সংখ্যা ২৫০ হলেও বর্তমানে হাসপাতালেটিতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪শ’। বেড না পাওয়ায় দেড় শতাধিক রোগী প্রচণ্ড গরমে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীর পাশে থাকা স্বজনদেরও।
অপরদিকে বহির্বিভাগে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বিভাগটিতে মাত্র ছয়জন চিকিৎসক সহস্রাধিক রোগীকে প্রতিদিন সামাল দিচ্ছেন। চিকিৎসক সংকট থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, সর্বশেষ আটদিনে বেড়েছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। ২৮ জুলাই (রোববার) থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৪৪ জন করে রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগে, রোগী ভর্তির গড় সংখ্যা ছিল ১শ’র নিচে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড় শতাধিক। এছাড়াও ডেঙ্গু জ্বর, ঠাণ্ডা-জ্বর, আমাশয়, পাকস্থলীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগী ভর্তির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। এছাড়া আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে ১১শ’ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৩ ও ৪ আগস্ট (শনিবার ও রোববার) দু’দিনে যথাক্রমে এক হাজার ৩০৫ ও এক হাজার ৪২৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকদিনে ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে নতুন করে প্রতিদিনই আট/দশ জন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ফলে মেডিসিন ওয়ার্ডে কোনো সিট খালি নেই। আর তাই বেড না থাকায় বাধ্য হয়েই এ ওয়ার্ডে অর্ধশতাধিক রোগীকে মেঝেতে সিট করে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ফরিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালটিতে রোববার সকাল পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৯১ জন। এরপর আরও রোগী ভর্তি হয়েছেন। আউটডোরে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রোগী দেখেন ছয়জন চিকিৎসক। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১১শ’ রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিতে হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা বাংলানিউজকে বলেন, এমনিতে ১শ’ শয্যার জনবল নিয়েই চলছে ২৫০ শয্যার এ হাসপাতাল। তার ওপর বর্তমানে বন্যা পরবর্তী রোগ-ব্যাধির প্রকোপের কারণে রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় থেকে পৌনে দুইগুণ বেড়েছে। অপরদিকে ৫৭ জন চিকিৎসকের জায়গায় রয়েছে মাত্র ২৩ জন চিকিৎসক। এসব কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৯
এসআরএস