ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মাত্র ৩ ভাগ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০
মাত্র ৩ ভাগ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন

ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ১৭ হাজার রোগীর একটি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে শতকরা ৮২ ভাগই মাইল্ড কেস। এর বাইরে শতকরা ১৫ ভাগ সিভিয়ার কেস, যাদের রেসপিরেটরি ডিফিকাল্টি আছে। বাকি তিন ভাগ ক্রিটিক্যাল রোগী, যাদের আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) সাপোর্ট প্রয়োজন। 

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এন-করোনা প্রতিরোধ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেন এ তথ্য জানায় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

 

আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশ্লেষণ দেখেই এটা বোঝা যাচ্ছে যে, এন-করোনা ভাইরাস নিয়ে আমাদের মধ্যে যে আতঙ্ক আছে, এটা নিয়ে আসলে সে মাত্রায় আতঙ্কের কিছু নেই। বেশিরভাগ কেসগুলোই খুব সাধারণ। আমাদের যে কমন ফ্লু রয়েছে, যেমন জ্বর, কাশি, যারা এসব উপসর্গ নিয়ে ভুগছেন তাদের হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন নেই।  

‘বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩১ হাজার ৪৮১ জন। এর মধ্যে প্রাণহানি হয়েছে ৬৩৭ জনের। চীনসহ এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত দেশের সংখ্যা ২৫। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হংকং, তাইওয়ান ও ম্যাকাওকে চীনের অর্ন্তগত ধরে হিসেব করেছে। ’

‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৫১ জন। আগের দিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬০০ জন। তাতে মনে করা হচ্ছে যে, করোনার প্রাদুর্ভাব কমতে শুরু করেছে, যদিও এখনই এমনটা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তারপরও আমাদের পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে যে, পরিস্থিতি হয়তো কিছুটা ভালোর দিকে যাচ্ছে। অন্তত নতুন রোগী আক্রান্তের হার বাড়ছে না, এটা আমাদের জন্য ভালো দিক। এছাড়া এর মধ্যে নতুন কোনও দেশও আক্রান্ত হয়নি, এটা ইতিবাচক। এগুলো থেকে বোঝা যায় যে, করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম কাজ করছে। ’  

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা আরও বলেন, চীনের সঙ্গে যেহেতু অনেক দেশের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা তুলনামূলক কম, আর পাশাপাশি অন্য অনেক দেশেই করোনা স্ক্রিনিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, এতে করে রোগীর সংখ্যা ও আক্রান্ত দেশের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছিল সেভাবে আর বাড়ছে না।  

‘আমাদের দেশেও চীন থেকে আসা বিমান ফ্লাইটগুলো ছাড়াও অন্য ফ্লাইটের যাত্রীদেরও স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। এটা করা হচ্ছে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য। আমরা জোর দিচ্ছি প্রতিরোধের ওপর। ’

করোনা প্রতিরোধে দেশে মাস্ক ব্যবহার এখনই দরকারি কিনা এ প্রসঙ্গে ফ্লোরা বলেন, মাস্ক ব্যবহার নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। রোগী ও রোগীর সেবাদানকারী ছাড়া আর কারোরই মাস্ক ব্যবহার করার দরকার নেই। চীনে সবার মাস্ক পরা দেখে অনেকেই মনে করেন আমাদেরও মাস্ক পরা দরকার। কিন্তু চীনে অনেক রোগী রয়েছে, জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনও রোগী সনাক্ত হয়নি, বা এখানে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি নেই। ফলে  সাধারণভাবে মাস্ক পরে বাইরে ঘোরারও এখন কোনও প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র যারা চীন থেকে এসেছেন এবং যাদের মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গ রয়েছে বলে আমরা মনে করছি, তাদেরই আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যে, তারা যেন মাস্ক পরে থাকেন। এই ভাইরাস হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ১ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। এর বাইরে যারা বাড়িতে এমন কাউকে সেবা দেবেন ও যারা স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তারা মাস্ক পরবেন।  

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আপাতত চীন ভ্রমণে নিরূৎসাহিত করেন আইইডিসিআর পরিচালক। যারা কোনো কারণে ভ্রমণ করেছেন, তাদের করনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত সতর্কতাগুল মেনে চলারও পরামর্শ দেন তিনি।  

সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২০
এমএএম/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।