ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রাজশাহীতে শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
রাজশাহীতে শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

রাজশাহী: রাজশাহীতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত থেকে শুরু করে নগরের মার্কেট ও হাট-বাজারগুলোতে অধিকাংশ মানুষই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। সরকারিভাবে মাস্ক পরার নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশ মানুষ তা ব্যবহার করছেন না, মানছেন না সামাজিক দূরত্ব।

এছাড়াও করোনার উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষাও করছেন না অনেকেই। ফলে শীতের শুরুতে রাজশাহী অঞ্চলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগের দুটি পিসিআর ল্যাবে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। প্রতিদিন দুই ল্যাবে ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা ও নওগাঁ জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয় এই দুই ল্যাবে।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিভাগে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৭০৪ জন। মারা গেছেন ৩১৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৯ হাজার ২৩৮ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ১৪৭ জন।

রাজশাহী বিভাগে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় ৭ হাজার ৯৩৮ জন। এছাড়াও নগরে ৩ হাজার ৭৪৬ জনসহ রাজশাহী জেলায় ৫ হাজার ৮৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৮২ জন, নওগাঁয় ১ হাজার ৩১৯ জন, নাটোরে ১ হাজার ৩১ জন, জয়পুরহাটে ১ হাজার ১২৫ জন, সিরাজগঞ্জে ২ হাজার ২২৪ জন ও পাবনায় ১ হাজার ১৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এ পর্যন্ত রাজশাহীতে ৪৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ জন, নওগাঁয় ২১ জন, নাটোরে ১২ জন, জয়পুরহাটে ৭ জন, বগুড়ায় ১৯৩ জন, সিরাজগঞ্জে ১৩ জন ও পাবনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা ভাইরাসে।

এছাড়া বিভাগে সুস্থ হয়েছেন- রাজশাহীতে ৪ হাজার ৯০৮, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৫৮ জন, নওগাঁয় ১ হাজার ২৬৯ জন, নাটোরে ৯০৫ জন, জয়পুরহাটে ১ হাজার ৯২ জন, বগুড়ায় ৭ হাজার ২০০ জন, সিরাজগঞ্জ ২ হাজার ২ জন ও পাবনায় ১ হাজার ১০৪ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে করোনা ভাইরাস মহামারি আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে। যে তাপমাত্রায় ভাইরাসটি বাড়ে, সহজে সংক্রমিত করতে পারে বা দ্রুত বিস্তার ঘটাতে পারে, শীতকাল সেটার জন্য আদর্শ। এ কারণেই ধারণা করা হচ্ছে যে, শীতকালে এই ভাইরাসের বিস্তার বেশি হতে পারে। এজন্য সবাইকে সর্তকতা অবলম্বনের পাশাপাশি আরও বেশি সচেতন হতে হবে।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ গত বছর শুরু হয়েছিল শীতকালেই, ডিসেম্বর মাসে। তখন দেখা গেছে, শীতপ্রধান দেশগুলোয় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে সারা বিশ্বেই আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, শীতকালে এই রোগটির প্রাদুর্ভাব আবার বেড়ে যেতে পারে।

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বলেন, মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। হাত ধোয়া, হাঁচি কাশির সময় শিষ্টাচার রক্ষা করা ইত্যাদি যে বিষয়গুলো এতদিন ধরে বলা হচ্ছে, সেটাই আরও কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়গুলোও অব্যাহত রাখতে হবে। মানুষ সচেতন না হলে শীতে রাজশাহীতে করোনার প্রভাব বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।