ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চীনের টিকার প্রথম ডোজ নিলেন ঢামেকের এক শিক্ষার্থী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
চীনের টিকার প্রথম ডোজ নিলেন ঢামেকের এক শিক্ষার্থী

ঢাকা: চীনের দেওয়া উপহারের করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার প্রথম ডোজ প্রয়োগ মঙ্গলবার (২৫ মে) শুরু হয়েছে। এই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) এক শিক্ষার্থীকে।

পরে ঢামেকের ২শ ৫৭ জন শিক্ষার্থীকে এই টিকা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণে এর উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ঢাকার ৪টি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের শরীরে প্রয়োগের মাধ্যমে এই টিকাদান কর্মসূচি চালু হলেও পর্যায়ক্রমে দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের এর আওতায় আনা হবে।

উদ্বোধন কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকাদান এই কর্মসূচি করতে পেরে আমি খুবই আন্দন্দিত। ঢাকা মেডিক্যাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে প্রথম পর্যায়ে এই টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে দেশের মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থীদের এই টিকা দেওয়া হবে। শুধু ঢামেকের ২শ ৫৭জন শিক্ষার্থীকে এই টিকা দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, অন্য দেশগুলোতে যখন করোনার প্রকোপ শুরু হয় তখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিতে থাকি। দেশে ভাইরাস শনাক্তের পর থেকেই আমরা জোরেসোরে কাজ শুরু করি। প্রথমে টিকার প্রটোকল, প্রশিক্ষণ শুরু করি। হাসপাতালগুলোতে ১২ হাজার করোনা বেড তৈরি করি। এখন দেশে পৌনে ৪শ ল্যাব কাজ করছে, ১শটির বেশি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন করেছি, বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ন্যাজাল ক্যানালা দিয়েছি। এখন পর্যন্ত ওষুধের অভাব হয়নি দেশে। এছাড়া দেশে আরও ২০ হাজার চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিয়েছি। ভারতের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে আর টিকা আনা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অন্য দেশগুলো থেকে ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে চীনের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে। রাশিয়া, আমেরিকার, ইংল্যান্ডের সঙ্গেও টিকা নিয়ে আলোচনা করছি।

তিনি বলেন, চীন থেকে হয়তো প্রথমে টিকা পাবো। উপহারের ৫ লাখ টিকা পেয়েছি তাদের কাছ থেকে। এই টিকাগুলো আমরা ফ্রন্ট লাইনারদের দেবো। বিশেষ করে মেডিক্যালের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের (ইন্টার্ন চিকিৎসক) আগে দেওয়া হবে। আশা করি, আমরা জুন থেকেই বেশি পরিমানে ভ্যাকসিন পাবো এবং মানুষকে দেওয়া শুরু করবো।

মন্ত্রী বলেন, ২য় বারের এই লকডাউনের পর করোনার ২য় ঢেউও এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে, আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাসের যে সংক্রমিত হচ্ছে, বাংলাদেশে এটি শনাক্ত হয়েছে। এজন্য আগে থেকেই আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ইতোমধ্যেই ওষুধ কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে তারা এর ওষুধ তৈরি করে রাখে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ১৫ লাখ লোকের ২য় ডোজে টিকা যেই অনিশ্চয়তায় পড়েছে, এই ২য় ডোজ প্রথম ডোজের ৩-৪ মাস পর পর্যন্ত নেওয়া যাবো। এজন্য আমরা আরও ২ মাস দেরি করেও তাদের ২য় ডোজ দিতে পারবো। সেজন্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যে দেশে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই আনার চেষ্টা করছি।

এ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নুর, ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাচিবের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ, ঢামেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকসহ আরও অনেকে।

ঢামেকের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা সালাম সমতার শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। দেশে চীনের প্রথম টিকা নিতে পেরে স্বস্তি ও সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তিনি। এছাড়া সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেও অনুরোধ করেন সমতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
এজেডএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।