ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

লকডাউনের ষষ্ঠ দিন: চাঁপাইয়ে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্তে আতঙ্ক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২১
লকডাউনের ষষ্ঠ দিন: চাঁপাইয়ে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্তে আতঙ্ক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশেষ লকডাউনের ষষ্ঠ দিন ছিল বোরবার (৩০ মে)। সকাল থেকে অন্যদিনের মতো পাঁচ উপজেলায় লকডাউন সফল করতে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১২টি ভ্রাম্যমাণ দল।

পাশাপাশি পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে ৬৫ জনকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ দিনে রাস্তায় যানবাহনের কোনো দেখা মেলেনি তবে প্রয়োজনের তাগিদে দু-একটি রিকশা-অটোরিকশা রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে পায়ে হেঁটে চলা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর খোলা থাকায় ভারত থেকে যথারীতি পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও শনিবার ভারতে আটকে পড়া ২ বাংলাদেশি সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে ফিরে আসলে তাদের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে ৮২ জন বাংলাদেশি এ বন্দর দিয়ে নিজ দেশে ফিরে শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলায় আইসোলেশনে আছেন।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে রেপিড টেস্ট ও রাজশাহীর পিসিআর ল্যাবের প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণে হার শতকরা ৩৫ ভাগ। গত ৪৮ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে নাচোলে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।  

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ২৫ মে শতকরা ৬২ ভাগ, ২৬ মে শতকরা ৫৫ ভাগ, ২৭ মে শতকরা ৩৪ ভাগ এবং ২৯ মে শতকরা ৩৫ ভাগ সংক্রমণের মাত্রা বিরাজ করছে। আর ২৮ মে কোনো ফলাফল ঘোষণা করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
  
অন্যদিকে আইডিসিআর থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে ৭ জনের দেহে করোনার ভারতীয় ধরনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে দুইজন শিবগঞ্জ ও ৫ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার। সাতজনের মধ্যে ২ জন নারী এবং পাঁচজন পুরুষ রয়েছেন। দুই নারীর মধ্যে একজন ডাক্তার। করোনার উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যেই ভারতীয় ধরনের উপস্থিতি চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাওয়ায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আক্রান্তরা ভারত ভ্রমণ না করলেও কোনো না কোনোভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের বিষয়টি শিকার করে জানায় ওই ৭ জনের নমুনা আবারো সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে তারা সবাই করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে এখন নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।

চাকরিজীবী লিটন আলী বাংলানিউজকে জানান, তিনি চাকরির সুবাদে বের হচ্ছেন বাধ্য হয়ে। কিন্তু করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ায় তিনি নিজেও আতঙ্কিত। তার দাবি গরীব খেটে খাওয়া মানুষকে খাদ্যের ব্যবস্থা করে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো জরুরি।

শিবগঞ্জে ব্যবসায়ী মমিনুল ইসলাম বাবু বাংলানিউজকে জানান, নতুন ভারতীয় ধরন নিয়ে তিনি চিন্তিত। এজন্য সীমান্ত সিল করে দিয়ে ব্যাপকহারে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরি বাংলানিউজকে জানান, ২-৩ দিনের ফলাফলে সংক্রমণ কমছে না বাড়ছে তা বিচার করা ঠিক হবে না। লকডাউন চলমান আছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং আরও কয়েকদিন পর ফলাফল দেখে তারপর বিচার বিশ্লেষণ করা যাবে।  

চলমান লকডাউন বাড়ছে কি না এ ব্যাপারে তিনি বলেন, লকডাউন বাড়ালে অবশ্যই ভাল হবে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি লকডাউনের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটায় বাস্তবায়ন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।