ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শয্যা খালি নেই, অক্সিজেন পোর্টের সংকট

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২১
শয্যা খালি নেই, অক্সিজেন  পোর্টের সংকট

সিলেট: করোনার সংক্রমণ বাড়ছে আশঙ্কজনক হারে। সেই চাপ পড়ছে হাসপাতালে।

ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেকটা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে হাসপাতালে ঠাই মিলছে না। বিশেষ করে সিলেটে করোনার বিশেষায়িত শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল এখন ‘ওভারলোডেড’ তথা শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’টি ওয়ার্ডকে করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছে।

সিলেটের অবস্থা এতোই খারাপের দিকে যাচ্ছে যে, গত দুই ‍দিনে আক্রান্ত প্রায় ৫শ’র দ্বারে পৌঁছে গেছে। আক্রান্তের এ অবস্থা চলমান থাকলে কোনো হাসপাতালে ঠাই হবে না রোগীদের!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৯৬ জন সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৪৮ জন পজিটিভ এবং ওপর ৪৮ জন উপস্বর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া আইসিইউতে আছেন ১৫ জন। অথচ হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৯০টি। আর ১৬টি আইসিইউর ১৫টিতেই রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অত্র হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ৯০ শয্যার হাসপাতালে ৯৬ জন রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১৬টি আইসিইউ বেডের একটি খালি রাখা হয়েছে। এরপর নতুন করে কোনো রোগী ভর্তি সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, করোনা রোগীদের বেলায় সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সাপোর্ট লাগে। সেখানে ৯৬ জন রোগী থাকলেও অক্সিজেন সরবরাহের জন্য পোর্ট আছে ৬৩টি। অন্যদের সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে, যদিও সেটা যথেষ্ট নয়। তাই রোগীর সংখ্যা বাড়ার আগে এখনই বিকল্প ব্যবস্থায় যাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।

এ বিষয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বাংলানিউজকে বলেন, করোনা রোগী বেড়ে যাওয়াতে চিকিৎসা সেবার জন্য হাসপাতালের ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। উপস্বর্গ নিয়ে আসা রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ জন্য সামসুদ্দিন হাসপাতালের উপর থেকে চাপ কমাতে উপস্বর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। তবে হাসপাতালে আইসিইউ মাত্র ১০টি রয়েছে। আরো ১০টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় ২০৫ জন চিকিৎসক ও ৭৩২ জন নার্স রয়েছেন। মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে ছুটি ব্যতিরেকেও ৭০০ জন কর্মস্থলে আছেন। এর মধ্যে ৪২ জনকে সামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সিলেট বিভাগে সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেডের সংখ্যা আছে ৩২টি। বিভাগীয় শহর ছাড়া মৌলভীবাজারে আছে ৫টি। অন্য দুই জেলায় নেই আইসিইউ। আর বেসরকারি হাসপাতালে ৫৫টি আইসিইউ রয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকিগুলো অন্যান্য গুরুতর রোগীদের জন্য রাখা হয়েছে।

করোনা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে জানিয়ে তিনি জনসাধারণকে সচেতন হতে পরামর্শ দেন। কেননা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।

এদিকে, সোমবার বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ২৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪২ জনই সিলেট জেলার। মঙ্গলবার আরো ২৫৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৩৪ জনই সিলেট জেলার বাসিন্দা। আক্রান্তদের বেশিরভাগে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাদেরকেও দ্বারস্থ হতে হবে হাসপাতালের। এছাড়া মঙ্গলবার দিনগত রাতে পরিক্ষায় আরো ১২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তন্মধ্যে ৮২ জন সিলেট জেলার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২১
এনইউ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।