ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শেবাচিমে বেড সংকট:‌ বরিশালে ১দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ৮৭৯, মৃত্যু ১৫

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২১
শেবাচিমে বেড সংকট:‌ বরিশালে ১দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ৮৭৯, মৃত্যু ১৫ বেডের অপেক্ষায় রোগী ও স্বজন। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল বিভাগে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, ভাঙছে একের পর এক পেছনের রেকর্ড। দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

আর এই সময়ে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে নতুন করে ৮শ ৭৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫শ ৭৫ জন, তবে তার আগের ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭শ ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিলো।

এদিকে সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩ হাজার ৫শ ৬৩ জন।

এছাড়া একই সময়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে বরিশালে ২ জন ও ঝালকাঠিতে ২ জনসহ মোট ৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু শনাক্ত হয়েছে। যা নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস

তিনি জানান, মোট আক্রান্ত ২৩ হাজার ৫শ ৬৩ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ১শ ২৮ জন।  

আক্রান্ত সংখ্যায় বরিশাল জেলায় নতুন সর্বোচ্চ ৪শ ৯২ জন নিয়ে মোট ১০ হাজার ১শ ৪ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ৮১ জন নিয়ে মোট ২ হাজার ৯শ ৭৩ জন, ভোলা জেলায় নতুন ৩৩ জনসহ মোট ২ হাজার ৩শ ২৬ জন, পিরোজপুর জেলায় নতুন ৯২ জন নিয়ে মোট ৩ হাজার ২শ ৮৯ জন, বরগুনা জেলায় নতুন ৭৪ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ১ হাজার ৯শ ৭৭ জন এবং ঝালকাঠি জেলায় নতুন ১শ ৭ জন শনাক্ত নিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮শ ৯৪ জন।

এদিকে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে শুধুমাত্র শেবাচিম হাসপাতালেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২শ ৩১ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৬শ ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৬শ ২৪ জনের মধ্যে ৩৪ জনের কোভিড টেস্টের রিপোর্ট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।

ওই হাসপাতাল পরিচালক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার) সকাল পর্যন্ত শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৭ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ৩শ ১১ জন চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ৯৮ জনের করোনা পজিটিভ এবং ২১৩ জন আইসোলেশনে রয়েছেন। আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ২শ জন করোনা পরীক্ষা করান। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ পজিটিভ শনাক্তের হার।

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র করোনা ডেটিকেটেড শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিট এখন রোগীতে পরিপূর্ণ। ১০ বেড থেকে শুরু করে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩শ বেডে রূপান্তরিত করা হলেও এখন কোনো সিটই খালি নেই। আর জনবলসহ নানান সংকটের কারণে আর নিট বাড়ানো সম্ভব না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।  

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটের মধ্যে ৩শত বেডের ইউনিট চালানোই অসম্ভব, সেখানে সর্বোচ্চ মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত। আর সাপোর্ট না থাকায় এ মুহূর্তে শেবাচিমের করোনা ইউনিটে বেড বাড়ানো সম্ভব নয়। এখন সংকটাপন্ন রোগী ছাড়া আপেক্ষিক ভালো অবস্থার রোগীদের ভর্তি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়েছে। সোমবার (১২ জুলাই) থেকে ২২ বেডের করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি করা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২১
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।