ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

অনিয়মের অভিযোগে রূপপুরে করোনা পরীক্ষার ১১ বুথ বন্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
অনিয়মের অভিযোগে রূপপুরে করোনা পরীক্ষার ১১ বুথ বন্ধ

পাবনা: অসম প্রতিযোগিতা ও নানা অনিয়মের অভিযোগে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষাকারী ১১টি বুথ বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বেসরকারিভাবে পরিচালিত এ বুথগুলো সরকার থেকে অনুমতিপ্রাপ্ত।

 

এদিকে হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করায় সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে বুথগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।  

চলতি মাসের ১৮ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমুহ) স্বাক্ষরিত পাবনা সিভিল সার্জন বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে জানা যায়, ঢাকার ডি.এন.এ সল্যুশনসহ আরটি-পিসিআর পরীক্ষার অনুমোদনপ্রাপ্ত ও পাবনা সিভিল সার্জনের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি নিয়ে বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে আরটি-পিসিআরে পরীক্ষা করছে। এতে করে নমুনা সংগ্রহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এরই আলোকে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে ঢাকা মহানগরী ও দেশের অন্যান্য জেলায় অবস্থিত বেসরকারি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন বুথের অনুমতি বাতিল ঘোষণা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এদিকে জেলা সদরসহ দেশের সবচাইতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এলাকা রূপপুর পারমাণকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজে নিয়োজিত বেসরকারি ১১টি প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নমুনা সংগ্রহসহ করোনা পরীক্ষার জন্য এসব প্রতিষ্ঠান রূপপুরের কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। চুক্তির শর্ত এবং নিয়ম অনুসারে এসব বেসকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাওনা রয়েছে। শর্তমতে তাদের অনেকের এখনো করোনা পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রয়েছে। আর এরই মধ্যে এ সিদ্ধান্ত আসায় চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে এসব সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মসহ নানা ধরনরে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে বেসরকারিভাবে স্থাপিত ফেমাস স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক মো. আব্দুল্লা খান বলেন, গুণগত মান ঠিক রেখে আমরাই প্রথমে বেসরকারিভাবে ঢাকাসহ এ রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় করোনার নমুনা সংগ্রহসহ পরীক্ষার কাজ করে আসছি। আমরা নিয়ম অনুসরণ করে বিশেষ এলাকার ভেতরে এ নমুনা সংগ্রহ করে থাকি। এখানে সব প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বরত সবাই দেখভাল করেছে। আমরা কোনো অনিয়ম বা ভুল তথ্য দেই না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত দেওয়ায় আমরা বেশ বিব্ররতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাদের একটু সময় দিতে পারত। সময় দিয়ে এ সিদ্ধান্ত দিলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়তাম না। যারা অনিয়ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক স্বাস্থ্য বিভাগ।  

জেলা সিভিল সার্জন মনিসর চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী যারা রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে বেসরকারিভাবে ঢাকার ডিএনএ সল্যুশনসহ আরটি-পিসিআর পরীক্ষার অনুমতি নিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে আসছিল এমন সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু যেসব প্রতিষ্ঠানের করোনা পরীক্ষার ল্যাবসহ বুথ রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলবে। বন্ধ করে দেওয়া ১১টি প্রতিষ্ঠানের কোনোটিরই নিজস্ব ল্যাব নেই। তারা নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনে। এক্ষেত্রে সঠিক পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান করেনা পরীক্ষার নামে অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। তাই ল্যাব ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।