ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

স্ট্রোক চিকিৎসাসেবার পরিসর আরও বাড়ানো প্রয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
স্ট্রোক চিকিৎসাসেবার পরিসর আরও বাড়ানো প্রয়োজন

ঢাকা: দেশে স্ট্রোক চিকিৎসাসেবার পরিসর আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব ডা. মো. সাইফ উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টারের মেজর সালেক চৌধুরী বীর উত্তম কমপ্লেক্সে স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাইফ উদ্দিন বলেন, স্ট্রোকের কারণগুলো আমরা জানি, কিন্তু মানি না। ধূমপান, মদ্যপান স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। আমরা এটা জানি এবং বুঝি, কিন্তু মানি না। এরপর আমাদের শহরে এখন না আছে হাঁটার জায়গা, না আছে তেমন ব্যবস্থা। এরপর খাবার নিয়ে সমস্যা তো আছেই। বিশেষ করে এখন চারদিক জাঙ্কফুডে ছেয়ে গেছে। বাচ্চারা এগুলোর প্রতি আরও আগ্রহী এবং এ খাবারগুলো স্ট্রোকের অন্যতম কারণ।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অসংখ্য ডাক্তারকে স্ট্রোক নিয়ে সার্টিফিকেট কোর্স করানো হয়েছে যেন মানুষ স্ট্রোক ও ডায়াবেটিক সম্পর্কে আরও ভালো এবং সঠিক দিকনির্দেশনা পায়। তবে আমার মনে হয় নিউরোলজি ট্রিটমেন্ট বা স্ট্রোকের ট্রিটমেন্ট এখনও খুব সীমিত পরিসরে হচ্ছে। শুধু আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে হবে না, সঙ্গে অভিজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে এ ধরনের চিকিৎসাসেবার পরিসর আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্সের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডাক্তার কণক কান্তি বড়ুয়া বলেন, স্ট্রোকের চিকিৎসা ব্যবস্থা অবশ্যয় আপডেট করা উচিত এবং তারা তা করছেন। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে একটি আধুনিক ও উন্নতমানের চিকিৎসাসেবার মাধ্যম তারা গড়ে তুলেছেন। স্ট্রোক করলে যত দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়, ততই ভালো। তবে সব সময় নিজে সচেতন থাকাই সব থেকে বেশি ভালো।

অনুষ্ঠানে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের বোর্ড অব অ্যাডভাইজার্স চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহমুদর রহমান।

এ সময় বক্তারা বলেন, স্ট্রোক করলে চিকিৎসার তুলনায় সুস্থ থাকা অবস্থায় তা প্রতিরোধ করাটাই সব থেকে বেশি জরুরি। স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়গুলো হলো- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, রক্তে চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান ও তামাক জাতীয় দ্রব্য পরিহার করা, মদ্যপান থেকে বিরত থাকা, কায়িক পরিশ্রম করা, চর্বি জাতীয় খাদ্য পরিহার করা এবং ফলমূল ও শাকসবজি বেশি করে খাওয়া। আর স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবে মুখ বেঁকে যাওয়া, হাত বা পা অবশ হয়ে যাওয়া এবং কথা জড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত।

তারা বলেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রতিটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান। কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, যা আর পুনরায় ফিরে পাওয়া সম্ভব না। এ ক্ষতির পরিমাণ প্রতি মিনিটে প্রায় এক দশমিক নয় মিলিয়ন কোষের সমান। দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির কেবল জীবনই বাঁচবে না, কমে আসবে পরনির্ভরশীলতা। এছাড়া উন্নত হবে জীবনযাত্রার মান ও বেঁচে থাকবে পরিবারের সঙ্গে কাটানো অমূল্য স্মৃতিগুলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।