ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ভোলায় আবারও বাড়ছে শিশুদের নিউমোনিয়া, শয্যা সংকট

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২২
ভোলায় আবারও বাড়ছে শিশুদের নিউমোনিয়া, শয্যা সংকট

ভোলা: আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে ভোলায় শিশুদের জ্বর, সর্দি, কাশিসহ নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এতে হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপ বাড়ছে।

 কিন্তু স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে একটি বেডে গড়ে ২-৩ রোগীকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে বিরম্বনার মধ্যে পড়ছেন রোগীর স্বজনরা।

গত এক সপ্তাহে ভোলা সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১৩৫টি শিশু। যার মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১২৬টি শিশু।

শিশুদের হঠাৎ করেই নিউমোনিয়ার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। তবে চিকিৎসকরা বলছেন- শিশুদের ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।  

দ্বীপজেলা ভোলায় উন্নত চিকিৎসা সেবার একমাত্র সেবাকেন্দ্র ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবন। এ ভবনে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ২৫টি। বর্তমানে এখানে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ রোগী।

যাদের বেশিরভাগ নিউমোনিয়া আক্রান্ত। বেডে জায়গা না পেয়ে অনেকেই গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে কখনও ঠাণ্ডা আবার কখনও গরমের কারণে শিশুদের চাপ বেড়েছে হাসপাতালে। তবে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত অভিভাবকরা।

চিকিৎসা নিতে আসা রতনপুরের এক শিশুর মা ফাতেমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন শিশু অসুস্থ ছিল, চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ভোলা হ্সপাতালে ভর্তি করেছি, শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। কিন্তু বেড সংকট থাকায় গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

আরেক অভিভাবক বিউটি বেগম বলেন, পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছি, এক বেডে দুইজন রোগী আছে, আমাদের চিকিৎসা নিতে কষ্ট হচ্ছে।

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স মৌসুমী বাংলানিউজকে বলেন, গত ১০ দিন ধরে হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপ। আমাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আমরা সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি।

এদিকে চিকিৎসক-নার্সরা জানালেন, শিশু রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। আর ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী থাকায় শিশুদের চিকিৎসা নিতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্বজনদের।

কয়েকজন রোগীর স্বজন জানান, কখনও গরম আবার কখনও ঠাণ্ডা -এমন অবস্থায় শিশুদের রোগ বাড়ছে। আমরা শিশুদের নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত।



আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুদের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তবে তাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।

ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাহিদ সুলতানা বলেন, বর্তমানে শিশুদের চাপ একটু বেশি, তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি।
শুধু নিউমোনিয়া নয়, বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেশি।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩১৬ জন নিউমোনিয়া রোগী চিকিৎসাধীন। ১০০ বেডের হাসপাতালে এতো রোগীর চাপ থাকায় আমরা তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেকটা বিরম্বনায় পড়ছি, তবে হাসপাতালের নতুন ভবন চালু হলে এ সমস্যা থাকবে না।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গত এক মাসে শুধু ভোলা হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ৫৭৯টি শিশু। যাদের মধ্যে মারা গেছে দুইটি শিশু। গত ১১ মাসে জেলায় ৪ হাজার ৯০৪ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিলেও মৃত্যুবরণ করেছে ২২ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।