কলকাতা: শিগগিরই কলকাতার আকাশে পাখির মতো ঝাঁকে ঝাঁকে উড়তে দেখা যাবে ড্রোন। আর এসব ড্রোন নগরবাসীর বাড়ি বাড়ি পৌঁছাবে খাবার, ওষুধ থেকে থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরণ।
সম্প্রতি ড্রোনের মাধ্যমে খাবার পৌঁছনোর এ উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার এক ফুড ডেলিভারি সংস্থা সুইগি। আকাশপথে কীভাবে সেই খাবার নগরবাসীর কাছে পৌঁছাবে তার ট্রায়াল রানও শুরু হয়ে গেছে। পরে স্থানীয় প্রশাসন সেই ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি দিলেই বাড়ির দোরগোড়ায় উড়ে যাবে ক্রেতাদের পছন্দসই খাবার।
মূলত ওই ফুড ডেলিভারি সংস্থাটি ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন রেস্তোরাঁর খাবার অনলাইনে বুকিংয়ের মাধ্যমে শহরবাসীর বাড়িতে ডেলিভারি করে। গোটা কলকাতার ৬শ রেস্তোরাঁসহ ভারতে এক লাখেরও বেশি রেস্তোরাঁর সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ। কিন্তু এই সংস্থার হাতে ড্রোন ওড়ানোর প্রযুক্তি নেই। তাই তারা ড্রোন ওড়ানোর কাজে চুক্তি সই করেছে ‘আনরা টেকনোলজিস’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে। তবে চুক্তি সেরে ফেললেই তো হলো না। ড্রোন ওড়ানোর জন্য চাই প্রশাসনের ছাড়পত্র।
ড্রোন সংস্থা আনরার দাবি, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ও ডিরেক্টরেট জেনারেল অব অ্যাভিয়েশনের থেকে ইতোমধ্যে তারা ট্রায়াল রানের অনুমতি পেয়েছে। পাশাপাশি তাদের দাবি, সংস্থার শক্তিশালী ড্রোনের মাধ্যমে বহুদূর পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবে যেকোনো পার্সেল। মূলত ডেলিভারি সংস্থাটির উদ্দেশ্য নগরবাসীসহ কলকাতার বিভিন্ন রেস্তোরাঁর পছন্দসই খাবার পশ্চিমবঙ্গের শহরতলী এবং গ্রামবাসীর কাছেও পৌঁছে যেতে পারে।
ইতোমধ্যে ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ শুরু করেছে আনরা। সংস্থাটি জানিয়েছে, খাবারের পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকায় তারা ওষুধ ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সরবরাহ করতে চায় ড্রোনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে তারা কলকাতার আরও দু’একটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে।
কলকাতার সঙ্গে একযোগে ট্রায়াল শুরু হয়েছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের এটওয়া ও পাঞ্জাবের রূপনগরে। সংস্থাটির দাবি, তাদের প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে তা দেশের জাতীয় এয়ারস্পেসকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন রাখতে সক্ষম। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গেও বিরামহীন সংযোগ রাখতে সক্ষম তারা। ফলে যে কোনো সময় খাবার বা ওষুধের জোগান দিতে তাদের অসুবিধা হবে না। পাশাপাশি সংস্থাটি জানিয়েছে, খরচ অনেকটাই কম হবে। তবে নির্দিষ্টভাবে কলকাতায় কবে থেকে এই পরিষেবা শুরু হতে পারে সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি সংস্থাটি।
এ বিষয়ে সংস্থাটির বক্তব্য, বাণিজ্যিকভাবে পরিষেবা চালু হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকারসহ রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি দরকার। সেই অনুমতি পেলেই তারা ড্রোনের মাধ্যমে খাদ্যরসিকের দুয়ারে পৌঁছে দেবে খাবার। প্রথমদিকে খাবার পৌঁছানোর কাজ শুরু করলেও ধাপে ধাপে ওষুধ ও কুরিয়ারের কাজ শুরু করবে। ফলে শিগগিরই বিদেশি ঘরানায় কলকাতার আকাশে ঘন ঘন উড়তে দেখা যাবে ড্রোন। যা বিদেশিদের কাছে অভ্যস্ত হলেও কলকাতাবাসীর কাছে হতে চলেছে একেবারে নতুন বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২১
ভিএস/এএ