কলকাতা: ক্রমশই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার পর ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে।
কলকাতা আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ বিশাখাপত্তনম থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম দিকে ৪২০ কি.মি. এবং উড়িষ্যার পারাদ্বীপ থেকে প্রায় ৬০০ কি.মি. দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে ক্রমশ উত্তর পশ্চিম দিকে আগাবে।
আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, এগোনোর পথে ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি সঞ্চয় করবে। শনিবার( ৪ ডিসেম্বর) সকালে জাওয়াদ ভারতের উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের কাছে পৌঁছাবে। এরপর কিছুটা দিক পরিবর্তন করে উড়িষ্যা উপকূল বরাবর এগোবে। রোববার (৫ ডিসেম্বর) উড়িষ্যার পুরী জেলার উপকূলে জাওয়াদের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরপর উত্তরমুখী হয়ে আগাবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে।
তবে ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্র বরাবর, নাকি স্থলভাগ ধরে পশ্চিমবঙ্গের দিকে আগাবে, তা নিয়ে শুক্রবারও (৩ ডিসেম্বর) কলকাতার আবহাওয়া দফতর থেকে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে সমুদ্র বরাবর ধরে এগিয়ে ভূ-পৃষ্ঠে আছড়ে পড়লে পশ্চিমবঙ্গে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে উড়িষ্যা থেকে স্থলভাগ ধরে বাংলার দিকে অগ্রসর হলে এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আগামী তিনদিন পশ্চিমবঙ্গে উপকূল-সহ দক্ষিণের একাধিক জেলায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতার আবহাওয়া অফিসের কেন্দ্রীয় উপ-পরিচালক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় জাওয়াদের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কি.মি.। আর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোয়। প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হবে। জাওয়াদের জেরে শনিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকেই দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি ও কলকাতাতে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ওদিন বিকেলের পর বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৬০ কি.মি.।
৫ ডিসেম্বর ভোর থেকেই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। সেদিন সকাল থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কি.মি. বেগে ঝড়ো বাতাস বাইবে। এই পরিস্থিতি কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১২ ঘণ্টা বজায় থাকবে। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ লাগোয়া নদিয়া, মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির পূর্বভাস দিয়েছে কলকাতার আবহাওয়া দফতর। সেদিন ঘণ্টায় প্রায় ৪০ কি.মি. বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে জাওয়াতের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্ততি নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সব রকম পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী ফিরাদ হাকিম।
শুক্রবার তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। পরবর্তীতে ঘূর্ণি ঝড়ের গতি প্রকৃতি দেখে সবকিছু বিবেচনা করব।
এদিকে আগামী ৩ দিন পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীদের সাগরে না যাওয়ার জন্য এরই মধ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির জেরে রাজ্যে ফের একবার ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বলে আগাম জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এছাড়া পর্যটনস্থলগুলিকেও ফাঁকা করার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবহাওয়ার পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে পূর্বভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ৩ ডিসেম্বর ২০২১
ভিএস/এমএমজেড