ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

স্মার্টফোন অ্যাপে শিশু পরিচর্যা

আইসিটি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৫
স্মার্টফোন অ্যাপে শিশু পরিচর্যা ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা যাবে নবজাতকের স্বাস্থ্য, বৃদ্ধি এবং টিকা সংক্রান্ত তথ্য। নতুন বাবা মাদের জন্য ‘মাম্মি’স বুক’ নামে বিশেষ এই অ্যাপটি অবমুক্ত করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড।

একইসঙ্গে মেনিনগোকক্যাল রোগ প্রতিষেধক টিকা ‘মিনাকট্রা’ এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সিম্পোজিয়ামে অ্যাপস ও ওষুধটি অবমুক্ত করেন জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর ডা. এম আর খান। এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি ওবের, বিএসপিআইডি’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মনজুর হোসাইন, বারডেমের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. নাজমুন্নাহার, বিপিএ’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং বিপিএ’র সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ডা. এম এ কে আজাদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।   
 
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গুগল প্লেস্টোরে বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য মাম্মি’স বুক অ্যাপটি বিএসপিআইডি অনুমোদিত টিকা ক্যলেন্ডার অনুযায়ী শিশুকে কখন কোন টিকা দিতে হবে তার আগাম বার্তা দেয়। জন্ম-তথ্য নিবন্ধনের মাধ্যমে একাধিক শিশুর ওজন, বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন বিষয়েও তথ্য দেয় এটি। অচিরেই এই অ্যাপসের মাধ্যমেই প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।

শিশুদের মেনিনজাইটিস সংক্রমণ সনাক্তকরণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধে দেশের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক ইনফেক্সাস ডিজিজেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিআইডি)। সিম্পোজিয়ামে দেশের আড়াইশ’ শীর্ষস্থানীয় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অংশ নেন। তারা শিশুদের ইনভেসিভ মেনিনগোকক্যাল ডিজিজ (আইএমডি) রোগ সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দিন দিন এই পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মেনিনগোকক্যাল একধরণের সংক্রমণ যা ব্যাকটেরিয়াম ন্যেসিরিয়া নামক জীবানুর দ্বারা ঘটে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার অত্যন্ত বেশী হলেও টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ সম্ভব।

বিএসপিআইডি’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মনজুর হোসাইন বক্তব্যে বলেন, মেনিনজাইটিসের কারণে রক্তে মারত্মক সংক্রমণ হতে পারে যার ফলাফল সেপসিস। সেপসিস ভয়ঙ্কর, এমনকি প্রাণঘাতীও। “উন্নত-অনুন্নত দুই ধরনের দেশেই রোগীর দুর্বলতা, মৃত্যু এবং প্রতিবন্ধিত্বের অন্যতম কারণ মেনিনজাইটিস। মেনিনগোকোক্যাল টিকা নিলে উন্নত দেশের মত অনুন্নত দেশগুলোতেও এই রোগের প্রকোপ কমে আসবে। ”

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান বলেন, বাংলাদেশের মত একটি দেশে যেখানে চিকিৎসার সুযোগ সীমিত এবং রোগীদেরই চিকিৎসার খরচ বহন করতে হয়, সেখানে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়াই যুক্তিসঙ্গত সমাধান। পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশির মত রোগ টিকার মাধ্যমে নিরাময়ের ফলে সাফল্যের মুখ দেখেছে বলে সিম্পোজিয়ামে উদাহরণ টানেন এম আর খান।   

বিএসপিআইডি ও সানোফিকে এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে সোফি ওবের বলেন, “শিশুরা দেশের ভবিষ্যত, যে কোন জাতির শিকড়। তাদের সুরক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মানবতাবাদী যেকোন উদ্যোগে ফ্রান্স সব সময়ই সামনের কাতারে দাঁড়িয়েছে। সানোফি বাংলাদেশও সমাজের কল্যাণে তাদের বিশ্বমানের ওষুধ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে এসে মানবতাবাদী সেই দর্শনের চর্চা করছে দেখে আমি গর্বিত। ”

এ বিষয়ে অন্য বক্তারা বলেন, এ রোগের সংক্রমণে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসার জন্য খুবই কম সময় হাতে পাওয়া যায়। অন্যান্য মেনিনজাইটিস রোগের মতই আইএমডি বা মেনিনগোকোক্যালের লক্ষণও একইরকম বলে নির্দিষ্টকরে চিহ্নিত করা কঠিন।

প্রথম ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে আক্রান্ত বেশিরভাগ শিশুর ভেতর এই রোগের অনির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যা হঠাৎই তাদেরকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। এমনকি দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার পরেও অনেকসময়ই তাদের মৃত্যু ঠেকানো যায় না।

চিকিৎসা নিয়ে বেঁচে থাকলেও তাদের প্রতি দশজনে ২ জন প্রতিবন্ধিত্বের শিকার হয় বলে উল্লেখ করেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে ঝুঁকি না নিয়ে শিশুকে টিকা দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৫
এসজেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।