মার্কিন উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং বিরুদ্ধে আদালতে প্রমাণ সরবরাহকারী বা ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ জন বারনেটকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বারনেট বোয়িংয়ের সাবেক কর্মী।
বারনেটের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছে বোয়িং। চার্লস্টন কাউন্টি কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে বারনেটের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা বলেছে ৬২ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ৯ মার্চ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।
২০১০ সাল থেকে বারনেট বোয়িংয়ে নর্থ চার্লস্টন প্ল্যান্টে কোয়ালিটি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন, যেখানে ড্রিম লাইনার ৭৮৭ তৈরি করা হত।
২০১৯ সালে বারনেট বিবিসিকে বলেছিলেন ড্রিম লাইনার ৭৮৭ উড়োজাহাজ নিম্নমানের পার্টস সংযোজনে কর্মীদের বাধ্যকরে বোয়িং। তিনি জানিয়েছিলেন জরুরি অবস্থায় ওই উড়োজাহাজের অক্সিজেন মাস্কের প্রতি চারটির মধ্যে একটি কাজ করতো না। যার ফেইলিং রেট ছিল ২৫ শতাংশ।
তিনি জানান মান সম্পন্ন না হওয়ায় ফেলে দেওয়া পার্টস গুলো বিন থেকে হারিয়ে যেত, পরে তা আবার উড়োজাহাজে সংযোজন করা হত।
সাউথ কেরোলাইনায় কাজ শুরু করার পর থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক চাপে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন কারণ নতুন উড়োজাহাজ তৈরিতে তাড়াহুড়ো মানেই কাজে মানের ব্যাপারে ছাড় দেওয়া কিন্তু তার উদ্বেগকে পাত্তা দেয়নি বোয়িং।
বোয়িং বারনেটের উদ্বেগকে উপেক্ষা করে গেলেও ২০১৭ মার্কিন কর্তৃপক্ষ ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এফএএ) তার এই উদ্বেগকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
তারা ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ হিসেবে বাতিল হওয়া ৫৩টি পার্টসের খোঁজ পাননি। এই ব্যাপারে বোয়িংকে ব্যবস্থা নিতে বলে সংস্থাটি। তাছাড়া কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডারেও সমস্যা ছিল বলে বোয়িং তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করে।
বারনেট জানিয়েছিলেন, প্রতিষ্ঠানের কাছে উদ্বেগের কথা জানিয়ে নিজের ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন তিনি।
মৃত্যুর আগে তিনি চার্লস্টনে সংশ্লিষ্ট মামলায় জবানবন্দি বা সাক্ষৎকার দিতে এসেছিলেন। গত সপ্তাহে তিনি বোয়িংয়ের আইনজীবীদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। শনিবার আরও একটি জেরায় তার অংশগ্রহণের কথা ছিল।
তিনি নির্দিষ্ট সময় আদালতে উপস্থিত না হলে তার হোটেলে তল্লাশি চালানো হয় এবং বারনেটকে হোটেলের পার্কিংলটে তার গাড়িতেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ বলছে বারনেটের শরীরে নিজের তৈরি করা ক্ষত থেকেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৪
এমএম