ঢাকা, শনিবার, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে ‘যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৫
ইয়েমেনে ‘যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদির

ঢাকা: ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ’র ‘যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেশটির শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীদের দমনে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সৌদি আরব।

হুথিদের পাশাপাশি নিজেদের অবস্থান থেকে ইয়েমেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মনসুর হাদীর সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে সালেহ’র সমর্থকরাও।

তাই তার এ যুদ্ধবিরতির আহ্বান আমলে না নিয়ে সৌদি সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, হাদী ও তার সরকারকে বিরোধীদের হাত থেকে রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রয়েছে সৌদি আরব।

এদিকে, হুথিসহ সরকারবিরোধীদের সশস্ত্র লড়াইয়ের মুখে দেশত্যাগ করা প্রেসিডেন্ট হাদী শনিবার (২৮ মার্চ) মিশরে অনুষ্ঠেয় আরব লীগের এক বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে জোটটির সূত্র।

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর যৌথ অভিযান ‘ডিসিসিভ স্টর্ম’ শুরুর পরপরই শুক্রবার (২৭ মার্চ) হাদী ইয়েমেনের বন্দরনগরী আদেন থেকে রিয়াদে পাড়ি জমান। রিয়াদ থেকেই তিনি কায়রোতে যাচ্ছেন।

ইয়েমেন সরকারের দাবি, ইরানি মদতপুষ্ট শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখলে নিলে দেশত্যাগ করেন হাদী। রিয়াদে পৌঁছেই এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, জোরপূর্বক তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

অবশ্য, সানা থেকে আদেন চলে যাওয়ার কিছুদিন আগে প্রেসিডেন্ট হাদী স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডার আব্দুল হাফেজ আল সাক্কাফকে অপসারণের নির্দেশ দেন। কিন্তু সে নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আগেই তাকে আদেন চলে যেতে হয়। আব্দুল হাফেজ আল সাক্কাফ সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ ও হুথিদের প্রতি অনুগত বলে মনে করে হাদীর সরকার। অবশ্য মনে করার কারণটি হাদী আদেন চলে যাওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে পড়ে। তিনি রাজধানী থেকে পালানোর পরপরই সাক্কাফ তার বাহিনী নিয়ে আদেনে প্রেসিডেন্টকে ধাওয়া করেন। সেই সঙ্গে হুথি ও সালেহ’র সমর্থকরাও আদেনে হামলা চালায়।

এরই প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ ও গালফ কাউন্সিলভুক্ত উপসাগরীয় ছয় দেশ- সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হুথিদের দমনে দেশটিতে ‘হস্তক্ষেপ‘ কামনা করেন প্রেসিডেন্ট হাদী। এই আবেদনের পরই সেখানে সৌদির নেতৃত্বে সামরিক অভিযান শুরু হয়।

অভিযানে অন্তত দেড় লাখ সৌদি সেনা অংশ নিয়েছে। বিমান হামলার জন্য নিয়োজিত রয়েছে অন্তত একশ’ যুদ্ধ বিমান। এছাড়া, সহযোগী দেশগুলোর পক্ষ থেকেও এই অভিযানে সেনা ও যুদ্ধবিমান অংশ নিচ্ছে।

এদিকে, হুথি ও হাদীবিরোধী বিদ্রোহীদের পেছন থেকে ইরান সরকার মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সৌদি আরবও। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৭ মার্চ) সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। চলমান অভিযানে সৌদি আরবের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছেন বলে কথা বলার সময় জানান তিনি।

হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইয়েমেনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে বলে দুই নেতা এক মত হয়েছেন।

অন্যদিকে, ইয়েমেনের বন্দরনগরী আদেনের নিকটবর্তী উপসাগরীয় এলাকা থেকে দুই সৌদি এফ-১৫ ফাইটার পাইলটকে উদ্ধার করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী। শুক্রবার (২৭ মার্চ) এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, সৌদি অনুরোধের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সময় রাত ৯টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ২০ মিনিটে) উপসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে ওই দুই পাইলটকে উদ্ধার করা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয় বলে জানায় সৌদি এসপিএ নিউজ এজেন্সি।

আনসার আল্লাহ বা হুথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনে একটি জায়দি সম্প্রদায়ভুক্ত শিয়া সংগঠন। জায়দি শিয়ারা হযরত হোসেনের (রা.) দৌহিত্র জায়দ ইবনে আলীর অনুসারী। সংগঠনটির নামকরণ করা হয় হুসেইন বাদরেদ্দিন আল-হুথির নাম থেকে। ২০০৪ সালে ইয়েমেনে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হন তিনি। তাকেই নিজেদের আধ্যাত্মিক নেতা মনে করে হুথিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।