ঢাকা: দুই বছর আগে মিশরীয় সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর কায়রোর ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটিতে রাজনৈতিক সংস্কার উৎসাহিত করতে ওবামা প্রশাসন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াসহ অন্যান্য সামরিক চুক্তিতেও পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসির সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার টেলিফোনে কথপোকথনের পরই এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানায়, সন্ত্রাস মোকাবেলা, সীমান্ত ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সিনাই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ওয়াশিংটন কায়রোকে সামরিক সহায়তার বিষয়টি বিবেচনা করছে।
টেলিফোনে দুই নেতার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকটের বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। সম্প্রতি আরব লীগ বৈঠকে এই অঞ্চলে সংকট নিরসনে একটি যৌথ বাহিনী গড়ে তোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। মিশরীয় প্রেসিডেন্ট সিসি এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
কায়রোকে সামরিক সহায়তা দানের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যসহ মিশরে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো দমনে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র বার্নাডেট মিহান।
পাশাপাশি মিশরকে বছরে একশ’ ত্রিশ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব করা হবে বলে টেলিফোন আলাপে সিসিকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন ওবামা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে মিশরকে ১২টি লকহিড মার্টিন এফ-১৬ জঙ্গিবিমান, ২০টি বোয়িং হার্পুন মিসাইল ও একশ’ ২৫টিরও বেশি এম১এ১ আব্রাম ট্যাংক দেবে।
তবে মিশরের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে মধ্যপ্রাচ্যে আরো সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। হিউম্যান রাইটস ফার্স্টের পরিচালক নেইল হিকস বলেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ করবে, মানবাধিকারের বিষয়ে তাদের আসলে কোনো মাথাব্যথা নেই।
১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তির পর থেকেই মিশর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র ক্রেতা দেশ। তবে ২০১৩ সালের জুনে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে নিলে কায়রোর ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৫