ঢাকা: বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে মানব পাচার প্রকট আকার ধারণ করায় এর সমাধান খুঁজতে আগামী ২৯ মে ব্যাংকক সম্মেলনের আহ্বান করেছে থাইল্যান্ড সরকার। অন্যদিকে, উদ্ধার পাওয়া অভিবাসীদের সাগরে ফেরত পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
গত মঙ্গলবার (১২ মে) থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাংকক সম্মেলন আহ্বান করে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। আর বৃহস্পতিবার (১৪ মে) এক বিবৃতিতে অভিবাসীদের ফেরত না পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ব্যাংকক সম্মেলনে বাংলাদেশ, মায়ানমার, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরাও।
এক বিবৃতিতে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, মানব পাচার রোধে আঞ্চলিক সরকারগুলোকে এই বিশেষ বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সংকট নিরসন করতে হলে সবগুলো সরকারকে জরুরিভিত্তিতে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
বৈঠকে জাতিসংঘের স্মরণার্থী বিষয়ক কমিশন (ইউএনএইচসিআর), ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম), অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইম ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধার পাওয়া বাংলাদেশি ও মায়ানমারের রোহিঙ্গা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হবে না বলে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরমানাথা নাসিরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
নাসির বলেন, ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের উদ্বাস্তু বিষয়ক সম্মেলনে স্বাক্ষর না করলেও অভিবাসীদের ফেরত পাঠাবে না।
জানা গেছে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে প্রায় ছয়শ’ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসী উদ্ধার করেছে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ। তাদেরকে বর্তমানে আচেহ প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে লোকসুকোন শহরে একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই অভিবাসীদের সাগরে প্রায় ডুবন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, উদ্ধার পাওয়া অভিবাসীদের পুনর্বাসন করতে ইন্দোনেশিয়ায় একটি বসতিহীন দ্বীপ ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওম) আঞ্চলিক প্রশাসন।
মানব পাচারের এই সমস্যার জন্য মায়ানমার সরকারকে অনেকাংশে দায়ী করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উপ এশিয়া পরিচালক ফিল রবার্টসন বলেছেন, দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নীপিড়ন চালিয়ে এই সমস্যার জন্ম দিয়েছে।
তিনি বলেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া এই সমস্যাকে সংকটের দিকে নিয়ে গেছে ঠাণ্ডা মাথায় অভিবাসী বহনকারী নৌকাগুলোকে সাগরে ফিরিয়ে দিয়ে। এরপর অসহায় মানুষগুলোর ক্ষুধা-তৃষ্ণা, অসুস্থতা ও নৌকাডুবিতে মুত্যুবরণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
ফিল বলেন, অভিবাসীদের উদ্ধার, মানবিক সহায়তা দান ও পুনর্বাসনে অন্যান্য সরকারগুলোর উচিত এই তিন সরকারকে একত্রে কাজ করতে আহ্বান জানানো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৫
আরএইচ
** আটশ’ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়া উপকূলে