ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ কিউবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৫
যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ কিউবা পানামা সম্মেলনে বৈঠক শেষে করমর্দন করছেন রাউল কাস্ত্রো ও বারাক ওবামা

ঢাকা: দু’দেশের শীতল সম্পর্কে বেশ ক’দিন ধরে উষ্ণতা বিরাজ করছিল। সম্প্রতি পানামায় একটি সম্মেলনে দু’দেশের প্রেসিডেন্টের সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক সে উষ্ণতার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।

সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত দেন একসময়ের শত্রু কিউবাকে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করছে তার দেশ। অবশেষে সেই ঘোষণা এলো। আনুষ্ঠানিকভাবে কিউবাকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিল মার্কিন মুলুক।

শুক্রবার (২৯ মে) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে তাদের এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, এ সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘ ৫৪ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কমিউনিস্ট নেতৃত্বাধীন ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্রটির কূটনৈতিক সম্পর্কসহ সার্বিক যোগাযোগ স্থাপনের দ্বার খুলে গেল।

গত ডিসেম্বরে একটি সম্মেলনে ওয়াশিংটন-হাভানা সম্পর্কে উষ্ণতা ছড়ানোর আভাস মেলার পর গত ১১ এপ্রিল পানামায় উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সম্মেলনের ফাঁকে ‘ঐতিহাসিক’ বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পর যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক ছিল সেটি।

ওই বৈঠককে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্বায়ুযুদ্ধকালের পর দু’দেশের সম্পর্কে এতোদিন ধরে যে পাথর চেপে বসেছিল, তা ওই বৈঠকের সুবাদে বরফ হয়ে গলতে শুরু করেছে।

বরফ গলে এতোই উষ্ণতা ছড়াতে থাকে যে, ওই বৈঠকে কিউবান প্রেসিডেন্ট তার দেশের ওপর ১৯৫৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বানও জানিয়ে ফেলেন ওবামাকে। কাস্ত্রোর সেই আহ্বানের সুতো ধরে ওবামা বলেন, এখনই সময় নতুন কিছুর চেষ্টা করার। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কিউবান সরকার ও জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কে জড়ানোটা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রেসিডেন্টের ওই কথার সূত্র ধরে এগোতে থাকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার কিউবাকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা জানালো তারা।

সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে দু’দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৮ সালের পর আর কখনও মুখোমুখি হননি দুই দেশের নেতারা। ১৯৫৯ সালে কিউবার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৬১ সালে দেশটিতে দূতাবাসও বন্ধ করে দেয় ওয়াশিংটন। এরপর ১৯৮২ সালে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কিউবাকে কালো তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কালো তালিকাভুক্ত দেশগুলোর তালিকায় কিউবাই প্রথম কোনো রাষ্ট্র হিসেবে জায়গা ‍পায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘কালো তালিকা’ভুক্ত হওয়ার কারণে কিউবাকে এতোদিন অর্থনৈতিক ও অস্ত্র রফতানির ওপর বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকতে হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থঋণের বিষয়ে বিভিন্ন বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৫/আপডেট ২২১৪ ঘণ্টা
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।