ঢাকা: আইপিএল দুর্নীতির খলনায়ক ললিত মোদির জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে অনৈতিকভাবে তদবির করার ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এ ঘটনায় তার পদত্যাগ দাবি করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস।
তবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সুষমা স্বরাজ দাবি করেছেন, তিনি শুধু মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে ললিত মোদিকে বিদেশ যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলেন।
তবে টাইমস নাউয়ের তদন্তে দাবি করা হয়েছে ওই সুপারিশের বিনিময়ে সুষমা স্বরাজের স্বামী ললিত মোদির কাছ থেকে বিভিন্ন মাত্রার সুবিধা নিয়েছেন।
এ ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন সুষমা স্বরাজ। বিরোধীদের কণ্ঠে পদত্যাগের দাবি ওঠার প্রেক্ষিতে তিনি রোববার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদিকে সুষমা স্বরাজ আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে ললিত মোদির জন্য সুপারিশ করে তিনি অন্যায় কিছু করেননি।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে ধারাবাহিক টুইটার বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন তিনি শুধু ব্রিটিশ দূতকে ললিত মোদির বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছিলেন।
এর আগে ভারতের টাইমস নাউ টেলিভিশন চ্যানেলের এক অনুসন্ধানী প্রতিবদনে ললিত মোদির পক্ষে সুষমা স্বরাজের এই তদবিরের বিষয়টি প্রকাশ হয়। পাশাপাশি ললিত মোদির জন্য তদবিরের বিনিময়ে সুষমা স্বরাজের স্বামী অন্যায় সুবিধা নিয়েছিলেন বলেও প্রতিবেদনে দাবি করে টাইমস নাউ।
তবে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘গত বছরের জুলাই মাসে ললিত মোদি আমাকে ফোন করে বলেন যে তার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। আগস্টের চার তারিখে তার অপারেশন হবে পর্তুগালে। হাসপাতালের বন্ডে স্বাক্ষর দিতে তার সেখানে থাকতে হবে।
ললিত মোদি তাকে আরও বলেন যে, পুর্তগালে যাওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেয়ার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকার তাকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপের শঙ্কায় তারা ছাড়পত্র দিচ্ছেন না।
‘এ পরিস্থিতিতে মানবিক দিক বিবেচনায় আমি ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অনুরোধ করি তারা যেন ললিত মোদির অনুরোধ বিবেচনা করেন। ’
উল্লেখ্য, আইপিএলে ম্যাচ গড়াপেটা সহ বিপুল অংকের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক আইপিএল কমিশনার ললিত মোদিকে অভিযুক্ত করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
২০১০ সালে আইপিএল এর ম্যাচ গড়াপেটার কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার সময় থেকেই যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন ললিত মোদি। ওই বছরই ললিত মোদির পাসপোর্ট জব্দ করে ভারত সরকার। ফলে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসলেও অন্য কোনো দেশে যেতে পারছিলেন না তিনি।
ললিত মোদির জন্য তদবিরের ঘটনায় জড়িয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি কিথ ভাজের নামও।
ব্রিটিশ মিডিয়ার তথ্য অনুসারে কেইথ ভাজ সুষমা স্বরাজের নাম করে ব্রিটেনের অভিবাসন কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রদান করেছিলেন মোদিকে কাগজ দেয়ার ব্যাপারে।
এদিকে এ ঘটনায় সুষমা স্বরাজকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে ভারতের বিরোধী দলগুলো।
সিনিয়র কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং বলেন, ‘ললিত মোদিকে অভিযুক্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একজন অভিযুক্তকে সাহায্য করেছেন। আমি সুষমা স্বরাজকে নৈতিক দায়ভার নিয়ে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৫
আরআই/