ঢাকা: তুরস্কের বিরোধী দলগুলোকে জোট সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি) নেতা কামাল কিলিচদারোগলু।
সোমবার (১৫ জুন) জোট সরকারের সম্ভাব্যতা নিয়ে সিএইচপি’র নীতি নির্ধারনি কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় কিলিচতারোগলু বলেন, জোট সরকার গঠন আলোচনা চলাকালে প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ানের প্রাথমিক রাজনৈতিক ক্রীড়নক হিসেবে ভূমিকা পালন ‘গ্রহণযোগ্য’ নয়।
এসময় তিনি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সাংবিধানিক সীমার মধ্যে থাকার পরামর্শ দিয়ে বিরোধী দলগুলোকে জোট সরকার গঠনের আহ্বান জানান। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ৭ জুনের নির্বাচনে বিরোধী দলগুলো সামষ্টিকভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছিলেন, জোট সরকার গঠনে কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার আগে তিনি সকল দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গত ৭ জুন তুরস্কে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে জয় পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি)। এ ফলাফলের কারণে রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রেসিডেন্টশাসিত করার পরিকল্পনা ভেস্তে যায় এরদোয়ানের। সেই সঙ্গে সরকার গঠনে সমমনা কোনো দলেরও দ্বারস্থ হওয়া জরুরি হয়ে পড়ে তার জন্য।
এরদোয়ানের প্রেসিডেন্ট শাসিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও একক সরকার গঠনে ক্ষমতাসীন দল একেপির প্রয়োজন ছিল ২৭৬ আসনের, কিন্তু তারা পায় ২৫৮ আসন। মোট গৃহীত ৯৯.৯৪ শতাংশ ভোটের মধ্যে তাদের ভোটপ্রাপ্তির হার ৪০.৮ শতাংশ।
এদিকে, প্রধান বিরোধী দল বামপন্থি রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ২৫.২ শতাংশ ভোট পেয়ে অর্জন করেছে ১৩২ আসন। আর রক্ষণশীল একেপির প্রতি অপেক্ষাকৃত সহনশীল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি) ১৬.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে অর্জন করেছে ৮১ আসন। তবে, সবচেয়ে বড় চমক উপহার দিয়েছে কুর্দি সমর্থিত আরেক বামপন্থি দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি)। একেপির কড়া সমালোচক বলে পরিচিতি দলটি ১৩.১ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতে নিয়েছে ৭৯টি আসন।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের পর ৪৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল যদি সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়, তবে ফের নির্বাচন আহ্বান করবেন প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে সেই নির্বাচন।
২০০৩ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে এখন প্রেসিডেন্টের কুরসিতে আসীন এরদোয়ান। তিনি তুরস্ককে প্রেসিডেন্টশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে ৯২ বছরের পুরোনো সংবিধান পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। এজন্য সংসদের ৫৫০ আসনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৫
আরএইচ