ঢাকা: ‘আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত’-এর খবর কানে এলেই চোখে ভেসে ওঠে কোনো জ্বালামুখ থেকে তীব্রবেগে বেরিয়ে আসছে উত্তপ্ত লাভা আর ধোঁয়া। আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ বিভিন্ন উপাদানে, নেমে আসছে আঁধার।
বর্তমান যুগে কোনো এলাকায় অগ্ন্যুৎপাত শুরু হলেই জারি করা হয় বিশেষ সতর্কতা। জনমনে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সর্বপ্রথম লক্ষ্য থাকে অগ্ন্যুৎপাতের এলাকা থেকে অধিবাসী ও পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া। সাদা চোখে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত জীবজগতের জন্য প্রাকৃতিক অভিশাপ বলেই মনে হবে। কিন্তু এরও রয়েছে ভালো দিক। মানবজাতিসহ পুরো জীবজগতের জন্য অগ্ন্যুৎপাত এক প্রাকৃতিক আশীর্বাদ বলেই দাবি গবেষকদের।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ গলিত লাভা আর ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলে ছুঁড়ে দিয়ে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এক অর্থে পৃথিবীকেই রক্ষা করে চলেছে। চোখ কপালে তোলার মতো তথ্য হলেও এর স্বপক্ষে যথেষ্ট শক্ত যুক্তি দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সুইডেনের ইউনিভার্সিটি অব লুন্দ-এর একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি এ সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে জানানো হয়, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীর জন্য প্রাকৃতিক ছাতা হিসেবে ব্যবহার হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিসহাউজ গ্যাসসহ বিভিন্ন কারণে প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই ধারায় বর্তমানে আমরা এখন যে বৈশ্বিক উষ্ণতা অনুভব করছি, তার চেয়ে ঢের বেশি উষ্ণতায় থাকার কথা আমাদের। হয়তো সে উষ্ণতা সহ্য করতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যেতো পৃথিবীর অনেক প্রাণি ও উদ্ভিদ প্রজাতি। কিন্তু উষ্ণতার পথে এক প্রকার বাঁধা হয়েই দাঁড়িয়ে রয়েছে অগ্ন্যুৎপাত।
প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেছেন, গত কয়েক দশক ধরে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সে হিসাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ছড়িয়ে পড়া উপাদান একদিকে গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ যেমন কমিয়ে দেয়, অন্যদিকে সূর্যরশ্মিকেও করে প্রতিফলিত। ফলে অতিরিক্ত উষ্ণতা থেকে রক্ষা পায় পৃথিবী ও তার বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৫
আরএইচ/