ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ফিদেল কাস্ত্রোর আত্মজীবনী: চুম্বক অংশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১০
ফিদেল কাস্ত্রোর আত্মজীবনী: চুম্বক অংশ

হাভানা: কিউবার কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর আত্মজীবনী ‘স্ট্র্যাটেজিক ভিক্টরি’ বইয়ের চুম্বক অংশ বৃহস্পতিবার অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। আত্মজীবনীতে কাস্ত্রো তাঁর শৈশব, কৈশোর ও বিপ্লবী হয়ে ওঠার কথা বলেছেন।



কাস্ত্রো জানাচ্ছেন, শৈশবের অন্যায্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামই তাঁকে বিদ্রোহী হিসেবে গড়ে তুলেছে।

৮৪তম জন্মদিনের (১৩ আগস্ট) সপ্তাহ খানিক আগেই প্রকাশিত ওই আত্মজীবনীর চুম্বক অংশে কাস্ত্রো বলছেন, “রাজনীতিক হিসেবে আমার জন্ম হয়নি। ছেলেবেলায় আমি এমন সব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতাম যা দেখে আমার মন উত্তপ্ত হয়ে উঠত। এগুলোর মাধ্যমেই সারা বিশ্বের বাস্তবতা অনুধাবন করতাম আমি। ”

অসুস্থতার কারণে কিউবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে অবসর নেওয়ার চার বছর হয়ে গেল। দেশের হাল তুলে দিয়েছেন ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রোর (৭৯) কাঁধে। এ মুহূর্তে কাস্ত্রোকে বেশ সুস্থ দেখাচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর সরব উপস্থিতি রয়েছে। সরকারি সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখিও চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে।

তাঁর আত্মজীবনীমূলক বইয়ের দুটি অংশ। প্রথম কিস্তিটি শিগগির বের হতে যাচ্ছে। এবার বইটার দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে তিনি ব্যস্ত বলে জানিয়েছেন। তবে বইয়ের প্রথম কিস্তিটি প্রকাশের তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

কিউবার হলগুইন প্রদেশে বিরান শহরের পূর্বাঞ্চলের বাড়ির কথা, শৈশবের স্মৃতি কাস্ত্রো রোমন্থন করেছেন। জন্ম থেকে ধর্মীয় বিদ্যালয়, হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পর্যন্ত কাস্ত্রো তুলে ধরেছেন তাঁর জীবনীতে।

আত্মজীবনীতে তিনি তাঁর একজন স্কুল শিক্ষককে মাখনের রুটি ছুড়ে মারার কথাও উল্লেখ করেছেন। ওই শিক্ষক তাঁকে শ্রেণীকক্ষের ভেতর মেরেছিলেন। কৈশোরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টকে একটি প্রশংসামূলক চিঠি পাঠানোর কথা উল্লেখ করেছেন। হাভানার মার্কিন দূতাবাস থেকে তিনি একটি প্রাপ্তিস্বীকার চিঠিও পেয়েছিলেন।

লেখালেখিতে বেশ ভালো ছিলেন। অঙ্ক কষতেন ভালো। চমৎকার অ্যাথলেট ও বন্দুকপ্রেমিও ছিলেন কাস্ত্রো।

কাস্ত্রো বলেন, “আমি জানতাম, শত্রুপক্ষ সবসময়ই সহ্যসীমার বাইরে। আমার খামখেয়ালি মনে, বিপদের মুখোমুখি হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকতো না। বন্দুক চালাতে পারতাম এবং সেটা সঙ্গেই রাখতাম আমি। ”

তিনি আরও বলেন, অল্প কয়েকজন মানুষের মধ্যে তিনিই একজন যে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন এমন এক সময়ে যখন ‘সাম্রাজ্য’ (যুক্তরাষ্ট্র) বাড়ছে। “কারও একার ওপর বিরোচিত ওই কর্মের দায় বর্তায় না। বহু মানুষের চিন্তা, ঘটনা ও আত্মদানের সম্মিলিত রূপই বিপ্লব সম্ভব করেছে। ”

এরপর তিনি বলেন, “এসব উপকরণ সঙ্গে থাকায় আমরা কিউবার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম, যা সামাজিক বিপ্লব সম্ভবও করেছিলো। এখনো ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ও অবরোধের পরেও সম্মানের সঙ্গে তা টিকে রয়েছে। ”

কাস্ত্রো এখনো কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে রয়েছেন। বিভিন্ন অবস্থার এমন সব অমোচনীয় স্মৃতির উল্লেখ করা হয়েছে তাঁর জীবনীতে যা তাঁকে গেরিলা যোদ্ধায় রূপান্তরিত করেছে।

বিপ্লবের ওই মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া একটি মুহূর্ত সম্পর্কে তিনি জানান, ১৯৫০ এর দশকে ৩০০ জন যোদ্ধার নেতৃত্ব নিয়ে তিনি ভীতিকর সিয়েরা মায়েস্ত্রা পর্বতমালায় ১০,০০০ সেনাকে পরাজিত করেছিলেন।

কাস্ত্রো জানান, আত্মজীবনীর দ্বিতীয় অংশে তিনি যে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিলেন, সেই কথাই বলবেন। এ সময় তাঁর সঙ্গের যোদ্ধাদের সবাই ছিলেন উস্কখুস্ক, অবিন্যস্ত ও শ্মশ্রুমণ্ডিত। চূড়ান্ত বিজয় এসেছিলো ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।