ঢাকা: লোভ! সম্পত্তির লোভ! এই লোভ খোদ ডাক্তার মেয়ের হাতে বাবার মৃত্যু ডেকে আনছিলো যেন! যদিও ভাগ্যের ফেরে সে যাত্রায় বেঁচে গেলেন বাবা। কিন্তু সম্পত্তির লোভে ‘নেশাগ্রস্ত’ ওই ডাক্তার মেয়ের পুরো কাণ্ডকীর্তি ধারণ হয়ে গেছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় (সিসিটিভি)।
আলোচিত এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের চেন্নাইয়ে। ঘটনাটি শনিবার (১৩ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সিসিটিভির ফুটেজও। বাবার প্রাণহরণের চেষ্টাকারী ডাক্তার মেয়ের নাম জয়াসুধা। আর হতভাগ্য বাবার নাম রাজগোপাল।
সিসিটিভি ফুটেজ ও আক্রান্ত বৃদ্ধের স্বজনদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন জয়াসুধার বৃদ্ধ বাবা রাজগোপাল। সেদিন বাবার সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত’ কথা আছে অজুহাত দিয়ে তিনি আইসিইউতে ঢোকেন। সঙ্গে ছিলেন তার দুই ছেলে অর্থাৎ বৃদ্ধের দুই নাতি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘরে ঢুকেই নার্সদের বের করে দেন জয়াসুধা। এরপর দরজা লাগিয়ে শয্যাশায়ী বাবাকে সম্পত্তির দলিলে সই করার হুমকি দেন। বৃদ্ধ বাধ্য হয়ে প্রথম পাতায় সই করলেও বাকিগুলোতে জোর করে টিপ সই করিয়ে নেওয়া হয়।
তারপরই দেখা যায় জয়াসুধা তার বাবার শরীরে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ সরবরাহকারী ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপটি খুলে দেন। এমনকি তারপর লাইফ সাপোর্টও খুলে দিয়ে বৃদ্ধকে কৌশলে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন।
কিন্তু এতোক্ষণ আইসিইউতে তাদের বসে থাকতে দেখে ছুটে আসেন নার্স ও ডাক্তাররা। তারা ঢুকতেই দুই ছেলেকে নিয়ে সটকে পড়েন জয়াসুধা। ডাক্তাররা তখুনি ফের ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপ ও লাইফ সাপোর্ট দেন রাজগোপালকে।
পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিষয়টি বুঝতে পারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে জয়াসুধার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন তার ভাই। এ নারী ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইন্ডিয়ান মেডিকেল কাউন্সিলেও জানান তিনি। হত্যাচেষ্টা মামলা তদন্ত করে জয়াসুধা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দিয়েছে পুলিশ। এখনও সে মামলার রায় ঘোষণা হয়নি।
তবে, সে যাত্রায় বৃদ্ধ রাজগোপাল বেঁচে গেলেও দু’মাস পরেই মৃত্যু হয় তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৬
এইচএ/